ইউক্রেন যুদ্ধ: জাতিসঙ্ঘ প্রধানের বৈঠককালেই কিয়েভে একাধিক বিস্ফোরণ

0

কিয়েভে জেলেনস্কির সাথে বৈঠক করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এরই ভেতর ঘটেছে বিস্ফোরণ। পর পর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ইউক্রেনের রাজধানী। এর আগে বুধবার মস্কো থেকে সেখানে পৌঁছেন জাতিসঙ্ঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস।

ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, যে সময় গুতেরেস এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করছিলেন, প্রায় সেই সময়টিতেই বিস্ফোরণ দুটি ঘটানো হয়। রাশিয়াই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে ইউক্রেনের দাবি। রাশিয়া অবশ্য এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।

চলতি সপ্তাহের গোড়ায় মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সাথে বৈঠক করেন গুতেরেস। বুধবার তিনি ট্রেনে কিয়েভে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার জেলেনস্কির সঙ্গে তার দীর্ঘ বৈঠক হয়। মারিউপলে আটকে থাকা বেসামরিক মানুষদের উদ্ধারের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে কথা হয়। জেলেনস্কির জানিয়েছেন, এর আগে একাধিকবার উদ্ধার কাজের প্রশ্ন সামনে এলেও রাশিয়া তা করতে দেয়নি।

বৈঠকের পর গুতেরেস এবং জেলেনস্কি সংবাদ সম্মেলন করেন। সে অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার আগেই পর পর দুটি বিস্ফোরণ হয় রাজধানী কিয়েভে। অনুষ্ঠানস্থল থেকে কিছুটা দূরে এ বিস্ফোরণগুলো ঘটানো হয়। জেলেনস্কি বলেছেন, এর থেকেই প্রমাণ হয়, রাশিয়া কী চায়। একই কথা বলেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পুটিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

বৃহস্পতিবার পুটিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাশিয়ার ডুমার সাবেক সদস্য ইলিয়া পোনোমারেভ। ২০১৬ সালে তিনি রাশিয়া ছেড়ে ইউক্রেনে এসে বসবাস করতে শুরু করেন। বর্তমানে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অন্যতম সদস্য তিনি। রাস্তায় নেমে যুদ্ধ করছেন।

তিনি বলেছেন, রাশিয়া বা দেশের মানুষ নয়, তার লড়াই পুটিনের বিরুদ্ধে। কারণ পুটিন একজন ‘মবস্টার’। ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, যারা লড়াই করছে, তারা যথেষ্ট সুসজ্জিত। দেশকে বাঁচানোর লড়াইয়ে তারা বদ্ধপরিকর। বস্তুত, পোনোমারেভও তাদেরই একজন।

গুতেরেসের বক্তব্য

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর এদিন গুতেরেস বলেন, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ বন্ধে অঙ্গীকারবদ্ধ। জাতিসঙ্ঘের কাঁধে দায় নিয়ে তিনি বলেছেন, এমন যে হতে পারে, তা তিনি কল্পনা করতে পারেননি। নিরাপত্তা পরিষদকে এর থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মারিউপল থেকে বেসামরিক মানুষদের উদ্ধার করতে সমস্ত পদক্ষেপ নেবে জাতিসংঘ।

মার্কিন সাহায্য

নতুন করে ইউক্রেনের জন্য ঐতিহাসিক এক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার তিনি ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য ঘোষণা করেছেন। বৃহস্পতিবার তা মার্কিন কংগ্রেসে পাশ হয়েছে। এর আগে দু’বার ৮০০ মিলিয়ন ডলার করে ইউক্রেনের জন্য সামরিক বরাদ্দ দেয় যুক্তরাষ্ট। এবার তা এক লাফে ৪৪ বিলিয়নে পৌঁছলো। এর ফলে ইউক্রেন আরো বেশি অস্ত্র কিনতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জেলেনস্কির বক্তব্য

যুক্তরাষ্টের বিশাল এই বরাদ্দের ঘোষণার পর বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধের জন্য এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শহরগুলিকে নতুন করে তৈরি করার জন্য ইউক্রেনের যা খরচ হচ্ছে, তাতে কোনো সাহায্যই যথেষ্ট নয়। সকলকেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com