গুম-খুন হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারকে নিয়ে ইফতার করেছেন বিএনপি সিনিয়র নেতারা।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে অশ্রুভেজা কণ্ঠে মুনিয়া আক্তার বলেন, ‘আচ্ছা, একটা মানুষকে মারতে কয়টা গুলি করা লাগে? তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নুরুজ্জামান জনি খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু শুধু তার বুকেই ১৬টি গুলি করা হইছে। এরপর তার পায়ে, ঘাড়ে গুলি করা হইছে। আপনারাই বলেন, একটা মানুষ মারতে কয়টা গুলি করা লাগে?’
৭ বছর আগে নুরুজ্জামান জনিকে হত্যা করা হয়েছিল। বিচার না পাওয়ার কথা জানিয়ে তার স্ত্রী মুনিয়া আরও বলেন, ‘আমি তখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। আমার বাচ্চার বয়স এখন ৭ বছর চলছে। সে এখন ক্লাস ওয়ানে পড়ে। এখন আমার বাচ্চাকে বাবার নাম লিখতে লেট (মৃত) নুরুজ্জামান লিখতে হয়। বাচ্চা আমাকে প্রশ্ন করে, মামনি আমার ফ্রেন্ড আমাকে প্রশ্ন করেছে, ওর বাবার নামের আগে লেট নেই, আমার বাবার নামের আগে লেট কেন?’ মুনিয়া আক্তার আক্ষেপ করে বলেন, এ দেশে বাবা-ভাইয়ের হত্যার বিচার হচ্ছে। আমরা কী বিচার পাব না?’
অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রায় ১০ বছর আগে এপ্রিলে গুম হওয়া বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর। তিনি বলেন, এ ১০ বছরে আমরা বহুবার, বহু জায়গায়, বহু মাধ্যমে কথা বলেছি, বিষয়টি নিয়ে কথা বলাটা খুবই কষ্টের। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে আমার কোনো দাবি নেই। যারা নিজেরাই খুনের সঙ্গে জড়িত, তারা কখনোই এর বিচার করবে না। গুম কী জিনিস, তারা সেটা স্বীকার করে না। কারণ, এটা তাদের সৃষ্টি। প্রত্যাশা করি, আগামীতে আমরা নিশ্চয়ই এ গুম ও খুনের বিচার পাব।
অনুষ্ঠানে গুমের শিকার ছাত্রদল নেতা মাহফুজুর রহমানের (সোহেল) মেয়ে সাফা, নুরুল আলম নুরের মেয়ে উম্মে হাবিবা, সাজেদুল ইসলামের বোন আফরোজা ইসলামসহ অনেকে নিখোঁজ বাবা, ভাই ও সন্তানের জন্য আকুতি জানান। তারা সবাই গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান চান, ফিরে পেতে চান হারানো স্বজনদের।