ফের পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি রাশিয়ার
ইউক্রেনে টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রুশ সামরিক অভিযান চলছে। যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা চললেও উত্তেজনা প্রশমনের কোনো লক্ষণই নেই। এই এক মাসেই কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির অনেক শহর। উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকায় বাড়ছে রুশ পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের আশঙ্কাও।
তবে মস্কো বলছে, রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই কেবল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন। অবশ্য সপ্তাহখানেক আগেও তিনি একই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (২৮ মার্চ) পিবিএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনের সাথে বর্তমান সংঘর্ষের কারণে নয় বরং ‘রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই’ কেবল পারমাণবিক অস্ত্রের আশ্রয় নেবে রাশিয়া।
সাক্ষাৎকারে পেসকভ বলেন, ‘ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কোনো ফলাফল অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কারণ হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের একটি নীতিমালা রয়েছে। সেখানে খুব স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া আছে যে, রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য হুমকি থাকলেই কেবল আমরা (পারমাণবিক অস্ত্র) ব্যবহার করতে পারি এবং আমরা আসলেই দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি দূর করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করব।’
এর আগে, গত ২২ মার্চ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, রাশিয়া তখনই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে যদি তার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি প্রেসিডেন্ট পুতিন বিবেচনা করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পেসকভ সেসময় বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার একটি নিয়ম আছে এবং এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সকল কারণ আপনি সেখানে পড়তে পারেন।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সুতরাং এটি (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) যদি আমাদের দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়, তবে পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। এছাড়া হামলার শুরুর মাত্র চারদিনের মাথায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার পরমাণু প্রতিরোধ বাহিনীকে বিশেষ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন।
পুতিনের এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্বজুড়ে সেসময়ই দেখা দিয়েছিল শঙ্কা। রুশ প্রেসিডেন্টের তীব্র সমালোচনা করে সেসময় হোয়াইট হাউস জানায়, পরমাণু হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।