নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে: মন্টু
গণফোরামের ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের অংশ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে অপর অংশের ওপর দোষ চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এই অংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু।
শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এর আগে, শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন অংশের জাতীয় কাউন্সিলে মন্টু গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও কয়েকজনকে আহত করে বলে অভিযোগ করেন ওই অংশের নেতা মোস্তাক আহমেদ। পরে বিকেলে মন্টু গ্রুপের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা আগেই বলেছি এই সম্মেলন সম্পূর্ণ অবৈধ ও গণতন্ত্রবিরোধী। তথাকথিত সম্মেলনে কমিটি দিতে না পারাই প্রমাণ করে তারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এই অংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই অবগত আছেন ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ধারাবাহিক অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের ফলে সংগঠনের সব পর্যায়ে স্থবিরতা ও বহুধা বিভক্তির রূপ নেয়। বার বার শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ গণফোরামকে সুসংগঠিত করার প্রত্যয় ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হলেও শীর্ষ ব্যক্তির অসংলগ্ন কথাবার্তা সংকটকে আরও ঘনীভূত করে। এমনি এক পরিস্থিতিতে ২০২০-২০২১ প্রায় এক বছরের প্রস্তুতিতে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গঠনতন্ত্রের ১০ ও ১১ ধারার বিধান মতে ড. কামাল হোসেনের সম্মতিতে ও লিখিত শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে গণফোরামের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। ওই জাতীয় কাউন্সিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃত্বে দেশব্যাপী সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় গণফোরাম ও ড. কামাল হোসেনের নাম ব্যবহার করে কিছু স্বার্থান্বেষী ও বিভেদকামী ব্যক্তি গঠনতন্ত্রিকভাবে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের তিন মাসের মাথায় ১২ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অবৈধ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাউন্সিল আহ্বান করে।
তিনি আরও বলেন, আজ সকাল ১০টায় গণফোরাম ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা জেলা, মহিলা ফোরাম, যুব ফোরাম ও ছাত্র ফোরাম যৌথভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ও ভোজ্যতেল, গ্যাস ও পানির অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তায় মানববন্ধন চলাকালীন সময়ে তথাকথিত কাউন্সিলের উদ্যোক্তারা মানববন্ধনে সমবেত ব্যাপক নেতাকর্মীর ওপর বিতর্ক সৃষ্টি করে হামলা ও অশালীন আচরণ করেন। এ ঘটনায় গণফোরামের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয় তথাকথিত কাউন্সিলে সমবেত কর্মীরাই তাদের নিজেদের অনৈক্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। আমরা গণফোরামের পক্ষ থেকে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে গণফোরামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে দেশব্যাপী সব নেতাকর্মীকে গণফোরামের মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠন প্রক্রিয়ায় এবং জনগণের দুঃখ-দুর্দশায় পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহসীন রশিদ, মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনসার খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রওশন ইয়াজদানী (ঢাকা জেলা), তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু প্রমুখ।