খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর হতে হবে

0

ঋণ অবলোপনের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের অঙ্কটি তুলনামূলক কম দেখালেও এতে আমানতকারী ও ঋণের ভালো গ্রাহক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। অনাদায়ী মন্দ ঋণের পরিমাণ বাড়লে ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে আমানতের ওপর কম সুদ এবং ঋণের ওপর বেশি সুদ নির্ধারণ করে। নতুন বিনিয়োগকারীরা উচ্চহারে সুদে ঋণ নিয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে পারবেন না, যা বলাই বাহুল্য। এতে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন, একইসঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কাজেই ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে। একই সঙ্গে ঋণ প্রদানে আরও বেশি পেশাদারি ও সতর্কতার পরিচয় দিতে হবে। ব্যাংকগুলোকে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

দেশে ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি রোধে এ খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে এ খাতে অপরাধ করার অথবা অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ কমে আসবে; বন্ধ হবে অনৈতিক চর্চা। এর পাশাপাশি ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সততা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ খাতের কোথাও কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়লে সব ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে নিতে হবে ব্যবস্থা। শীর্ষ ঋণখেলাপিরা এ খাতে যেসব সমস্যা সৃষ্টি করেছে, তা বারবার আলোচনায় এলেও খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সাফল্যের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এ সমস্যা কতটা জটিল আকার ধারণ করেছে, বিভিন্ন সময়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতে তা স্পষ্ট হয়েছে। অর্থনীতির চালিকাশক্তি ব্যাংক খাতকে আরও গতিশীল করতে এ বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এটা স্পষ্ট যে, খেলাপি ঋণের বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এসব টাকা ফেরত আনতে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিকল্প নেই। বাস্তব পরিস্থিতি অবলোকনে আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই-ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শৈথিল্য প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ও কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সুখবর মিলবে না, যা বলাই বাহুল্য।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com