ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক মৃত্যুদণ্ড

0

সমাজে যেসব অন্যায়-অপকর্ম ঘটে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, ঘৃণ্য আর জঘন্যতম হচ্ছে ধর্ষণ। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ছয় মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে কিশোরী, তরুণী; এমনকি মধ্যবয়সী নারীরাও ধর্ষকের হাত থেকে নিরাপদ নয়।

কিছুদিন পরপরই এখানে-ওখানে, ঘরে-বাইরে, বাসে, রাস্তায়, স্কুলে, কলেজে, মাদ্রাসায় ও কর্মস্থলে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর প্রতিকার আসলে কী?এর শেষ-ই বা কোথায়?

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারী ধর্ষিত হওয়ার পর সমস্ত দোষ ওই নারীর ওপরই বর্তায়। ‘তার পোশাক ভালো ছিল না, একা একা ঘর থেকে বের হয়েছিল কেন? পর্দা করে না, বোরকা পরে না’ ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়াও ধর্ষিত কেউ আইনের সাহায্য চাইলে, তাকে কেন ধর্ষণ করা হল, কীভাবে ধর্ষণ করা হল, তার সম্মতি ছিল কিনা; এমন সব অবান্তর প্রশ্ন করে করে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করা হয় এবং মামলা নেয়া হলে মেডিকেল চেকআপের নামে তৃতীয় দফায় তাকে ধর্ষণ করা হয়।

এখানেই শেষ নয়; এরপরও ধর্ষণের শিকার হওয়া একজন নারীকে সমাজ, সংসার, পরিবার, আত্মীয়-স্বজনরা কেউ ভালো চোখে দেখে না; ছুড়ে ফেলে দেয়। যে জন্য এই সমাজে বহু ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে না; থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। ধর্ষণের শিকার অনেকেই লজ্জায়, অপমানে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। অন্যদিকে ধর্ষকরা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেউ ধরা পড়লেও জামিনে ছাড়া পেয়ে অবাধে ঘুরে বেড়ায়।

সরকার নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর অধিকার নিয়ে প্রায়ই আশা জাগানিয়া কথাবার্তা বলে। এরই ধারাবাহিকতায় সংসদ ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অথচ নারী ধর্ষণের মতো এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে সরকারের ভূমিকা বা পদক্ষেপ কী? বিশ্বের অন্যান্য দেশে ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন দেখলে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশ এখনও কেন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না? চীনে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, সৌদি আরবে পিটিয়ে মারা ও শিরশ্ছেদ, উত্তর কোরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড, আফগানিস্তানে মাথায় গুলি করা, ইরানে ফাঁসি দেয়া, ফ্রান্সে কমপক্ষে ১৫ বছরের কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ৩০ বছরের জেল।

বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন-২০০০ এর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ নারী ও শিশুকে ধর্ষণ করে তাহলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হবে।

আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ নারী বা শিশুকে ধর্ষণের পর ভিকটিম মারা যায় তাহলে ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড হবে। বাস্তবতা বলে, ধর্ষণের বিরুদ্ধে না আছে আইন, না আছে আইনের প্রয়োগ। আইনের প্রয়োগই যদি থাকত তাহলে এদেশে ধর্ষণ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হতো না। এখনই সময় বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা এবং ধর্ষণ আইন সংশোধন করা; যাতে জামিনে কেউ ছাড়া না পায়। সেইসঙ্গে দ্রুত বিচার আইনে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হোক।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com