জাতিসংঘের গুম কমিটির আসন্ন বৈঠকে থাকবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের আসন্ন বৈঠকে বিশ্বের ২৪টি দেশের তিন শতাধিক গুমের ঘটনা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই আলোচনায় বাংলাদেশে গুমের বেশ কিছু অভিযোগ নিয়েও ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যরা কথা বলবেন।
গতকাল শুক্রবার জেনেভা থেকে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গুমবিষয়ক জাতিসংঘের ওয়ার্কিং কমিটির ১২৬তম বৈঠক ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার তায়-উং বাইকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজন, ২৪টি দেশের সরকারি প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং অন্য অংশীজনদের সঙ্গে গুমের অভিযোগ, প্রক্রিয়াগত বিষয় এবং গুমের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলবেন।
জানা গেছে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষাবিষয়ক সনদ ঘোষণার তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে নির্দিষ্ট দেশ সফর এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও পাঁচ দিনের বৈঠকে আলোচনা হবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ গত ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে বলেছিল, বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ভিন্নমতাবলম্বীদের নিশানা করতে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী চলমান এবং ঘন ঘন গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। গুমের এসব অভিযোগের বিষয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকার দাবি করেছে।
গুমবিষয়ক জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ওয়ার্কিং গ্রুপ গত বছরের ২০ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ১২৫তম অধিবেশন শেষে প্রতিবেদন পেশ করে। পরে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ওয়ার্কিং গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনটি হালনাগাদ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এবং সদস্যদেশগুলোর কাছে পাঠায়।
জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের এক নথিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গুমের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কয়েক বছর ধরে এ নিয়ে উদ্বেগ জানালেও বাংলাদেশ কোনো সাড়া দিচ্ছে না। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের কাছে গুমের বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে জানানো হলেও সেগুলোর কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ১৯৯৬ সাল থেকে ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। বাংলাদেশ কেবল একটি গুমের অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। ওয়ার্কিং গ্রুপ অমীমাংসিত বাকি অভিযোগের বিষয়ে শিগগির জবাব দেবে বলে আশা করে। বাংলাদেশে গুমের ক্ষেত্রে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এগুলো দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া উচিত।
২০১৩ সাল থেকে গুমবিষয়ক জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ সফরের অনুমতি পেতে বেশ কয়েকবার অনুরোধ জানিয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ এপ্রিলে বাংলাদেশকে সফরের অনুরোধ জানিয়েও সাড়া পায়নি ওয়ার্কিং গ্রুপ।