প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন এর চেয়ে ‘কুশিক্ষা’ পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না: আলাল
শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপি’র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, এখনো সাবধান হোন, ভালো হন, ভালো হতে পয়সা লাগে না।
তিনি বলেন, আপনার ভাষায় কফিনে যদি জিয়াউর রহমানের লাশ না থাকে। চন্দ্রিমা উদ্যানে যদি জিয়াউর রহমান না থাকে, আর সেই ভুয়া লাশের জন্য যদি ২০/২৫ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়। তাহলে বুঝেন বেগম খালেদা জিয়া যদি ফিরোজার সামনে দাঁড়িয়ে একটা মাইকে চিৎকার দেয় কত লক্ষ মানুষ জড়ো হবে, চিন্তা করে দেখেন। সুতরাং এখনো সাবধান হোন, ভালো হন, ভালো হতে পয়সা লাগে না।
শনিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক ফোরাম আয়োজিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি সারা বাংলাদেশের সকল অভিভাবকের। কিন্তু যারা আজকে এই দায়িত্বে রয়েছেন তারা চান না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক। গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে নাকি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে একটি মহল। খুব ভালো কথা, বিশৃঙ্খলা হোক আমরাও চাই না। কিন্তু শৃঙ্খলাটা রেখেছেন কোথায় আপনারা?
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনাদের সৈনিকেরা, আপনাদের অনুসারীরা, আপনাদের শিক্ষক পরিমল তার ছাত্রীকে আজ থেকে ১২ বছর আগে উলঙ্গ করে যে ভিডিও ছেড়েছিল, আজ পর্যন্ত সে অপরাধের বিচার করেছেন? এই ভিকারুন্নেসার বর্তমান প্রিন্সিপাল যে ধরনের কথা বলেছেন এর চেয়ে বড় কুশিক্ষা কি আরও আছে? ১৯৭২ সালে আপনারা অটোপ্রমোশন দিয়েছেন এবারও দিয়েছেন। আপনাদের সরকার অটোপ্রমোশনের সরকার।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভোটবিহীন আপনারা সরকার হয়ে যান। ভোট ছাড়া মন্ত্রী হয়ে যান। সচিবরা আপনাদেরকে গুতা দেয়, আপনারা সচিবদের কে লাঙ্গলের ফলা দিয়ে গুতা দেন। এই গুতা গুতির শিক্ষা দিচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষদেরকে। আজ সুশিক্ষা বলতে কিছু নেই। কুশিক্ষায় ছেয়ে গেছে সারাদেশ।
আজ প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন এর চেয়ে কুশিক্ষা পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে বলে আমার মনে হয় না যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনি বলেছেন, আপনার মায়ের হাতে যারা ভাত খেয়েছে তারা আপনার পিতা হত্যার সাথে জড়িত। সেই অশিক্ষিত, মুনাফিক দলের নেত্রী আপনি। কুশিক্ষা আছে বলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেন না। আপনি জানেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভ্যাট বিরোধী প্রতিবাদে আমাদের সন্তানরা রাস্তায় নামলে আপনার সিংহাসন তলিয়ে যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে আবরার হত্যার পক্ষপাতিত্ব হলে শিক্ষার্থীরা রুখে দাঁড়াবে এই ভয়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেন না এই ভয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা মাদক ব্যবসাসহ কুকীর্তি করে তারা যাতে না করতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেন না এই ভয়ে আপনার নিয়োগকৃত ভাইস চ্যান্সেলররা ও ছাত্রলীগের নেতারা টেন্ডার ভাগাভাগি করতে পারবে না বলে। আমরা বুঝি, আর এই জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখে জাতিকে অশিক্ষিত করে অন্ধকারের রাখছেন।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে কুশিক্ষা হয়তো কিছুটা দূর হবে। আপনারা (আওয়ামী লীগ) নিশ্চিত থাকেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে অভিভাবকরা খুশি হবেন। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী খুশি হবে। যত দেরিতে খুলবেন জনগণ বিক্ষুব্ধ হবে। আর এক সময় বেনজির, ডিসি হারুনও কোন কাজে আসবে না। এক সময় কোন বাহিনী কাজে আসবেনা। বাংলাদেশের মানুষই বড় বাহিনী।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি’র যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নাজিমউদ্দিন আলম, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন প্রমুখ।