ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশায় শতভাগ দায়ী: মান্না

0

স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশায় সরকার শতভাগ দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। গতকাল বুধবার নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এপ্রিল মাসে আমরা সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলাম, দুই অনুষ্ঠানের প্রভাবে দেশ আজ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। দুমাস পর সেই সন্দেহই বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে। জানুয়ারি মাসে দেশে করোনার ইউকে (কেন্ট) এবং সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেলেও তা জানানো হয়েছিল মার্চ মাসে এসে। এর মধ্যে দেশে অনেকগুলো তথাকথিত স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে। মার্চ মাসের শুরুতেই করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ দেখা গেলেও মার্চের শেষ দুই সপ্তায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান জাঁকজমক ভাবে পালন করার জন্য সরকার অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো কথা বলেনি।

মূলত এই দুইটি অনুষ্ঠানই এই জাতিকে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সামনে ফেলে দিয়েছিল যার খেসারত দিচ্ছে পুরো দেশ। যার ফলশ্রুতিতে এখন দেশে এক দিনে ১১ হাজারের বেশি করোনা রোগী সনাক্ত এবং দেড় শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ন্যূনতম কোনো শিক্ষা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ।

আসলে স্বাস্থ বিভাগ তথা বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের সেই স্বদিচ্ছাই নেই। দেশের কোথাও করোনার ন্যূনতম চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। নেই আইসিইউ বেড, অক্সিজেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, করোনা পরীক্ষার কীট এমনকি সাধারণ বেড। গত বছরকরোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর উদ্যোগের কথাজানিয়েছিল সরকার। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এখনও দেশের ১৭টি জেলায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নেই।

প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাওয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। আর এদিকে অবৈধ ভোট ডাকাত সরকারের স্বাস্থমন্ত্রী দেশে অক্সিজেনের কোন সংকট নেই জানিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে তামাশা করছেন।

তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) অধিকাংশ জরুরি চিকিৎসা উপকরণেরই মজুদ এখন শেষ। বর্তমানে সিএমএসডিতে কোনো হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, রেমডিসিভির ইনজেকশন, কভিড১৯ টেস্টিং কিট ভেন্টিলেটর নেই।অক্সিজেন সিলিন্ডারের মজুদ আছে মাত্র পাঁচ হাজারে। মার্চে দেশে করোনার চলমান প্রবাহ মারাত্মক আকার নেয়া শুরুর পরসারা দেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে চাহিদাপত্র সংগ্রহ করে দেয়া হয় সিএমএসডিকে। এরপর দিনে দিনে চাহিদার পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু আগের চাহিদাপত্রে চাওয়া সরঞ্জাম উপকরণের সংস্থান করতে পারেনি সিএমএসডি।

তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করলেও এসব অধিকাংশ জেলায় আইসিইউবেড, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা এমনকি পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার পর্যন্ত নেই। আট জেলায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা এখনোচালু করতে পারেনি সরকার। অথচ সদিচ্ছা থাকলে খুব সহজেই তা চালু করা যেত। একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার দাম থেকে লক্ষ টাকা। অর্থাৎ ১০০০ ক্যানুলা কিনতে খরচ হবে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা। আমরা যদি ৫০০০ ক্যানুলা কিনে ফেলতাম তাতে আমাদের খরচ হত ২৫০ কোটি টাকা। তার সাথে আর কিছু টাকা যোগ করে জেলা পর্যায়ে তো বটেই, উপজেলাপর্যায়েরও অনেক হাসপাতলে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই এর ব্যবস্থা করা যেত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com