পশ্চিমবঙ্গের একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ভোট গণনা নিয়ে ফের তোলপাড়
পশ্চিমবঙ্গের একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম থেকেই সবার নজর ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। কারণ ভোট প্রচার কালেএ কেন্দ্রে দুই হেভি ওয়েটের মধ্যে ছিল কাঁটায় কাঁটায় টক্কর।
লড়াইটা ছিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম বিজেপি প্রার্থী তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে।
নির্বাচনের ফল প্রকাশে পর জানা যায়, একক ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস বাংলা দখল করলেও নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে১৯৫৬ ভোটে পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অবশ্য গত ২ মে ভোটের ফল ঘোষণার দিন প্রথমদিকে জানা গিয়েছিল, ১২০০ ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে জিতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় কিছু ভোটে পিছিয়ে আছেন মমতা।
এরপর ওইদিন সন্ধ্যার দিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, নন্দীগ্রামের জয়ী প্রার্থী শুভেন্দু অধিরকারি। কিন্তু নির্বাচনের এ ফল মেনে নিতে পারেনি তৃণমূল নেত্রী।
মমতা অভিযোগ করেছিলেন, ‘সমগ্র রাজ্যের এক ফল আর নন্দীগ্রামর আরেক ফল। এটা কখনই হতে পারে না, আদালতে যাবো আমি। খবর আছে, ফল ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে। আর সেটা ঠিক খুঁজে বের করবো।
সেই থেকেই নন্দীগ্রামের নির্বাচনের ফল নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। এরই মধ্যে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে, যা নিয়েবঙ্গ রাজনীতিতে ফের তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ার এসএন রায় স্কুলের বুথের মোট ভোটার সংখ্যা ৬৭৬ জন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নথিতে লেখা রয়েছে ভোট পড়েছে ৭৯৯টা। যা দেখে ফের নন্দীগ্রামের ভোটগণনায় গরমিলের অভিযোগ সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, সবকিছু দেখে শুনেও ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ফাইনাল রিপোর্ট কীভাবে সই করেছিল।
এ ঘটনা সামনে আসতেই নন্দীগ্রামে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান জানান, গণনার দিন সার্ভার না থাকার কারণে শেষের ৩ ঘণ্টা গণনা বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও ১ ঘণ্টা দেরি হয়। তারপর ভিভিপ্যাট গণনার সময় বিরোধীদলের চাপে সেখানথেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হয়েছিল।
এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছেন, একটা বুথেই প্রায় ৮০টা ভোটের গরমিল? তাহলেই ভাবুন, বাকি গুলোতে কী হয়েছে? প্রথম থেকেই আমরা বলে আসছি নন্দীগ্রামের গণনা নিয়ে জলঘোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ওই বুথের গণনা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেতৃণমূল কংগ্রেস। আসল বিষয় হলো রেয়াপাড়ার এসএন রায় স্কুলের বুথের ভোটার সংখ্যা ৭৯৯ এবং সেখানে ভোট পড়েছে৬৭৬টা। আদালত ও নির্বাচন কমিশন রয়েছে। তারাই সত্যতা জানাবেন।