অনির্বাচিত সরকারকে রুখতে হলে আমাদের সব বিভক্তি ভুলে এক হতে হবে: মির্জা আব্বাস

0

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া চলছে, নেতৃত্বশূন্য করার প্রক্রিয়া চলছে।যারা দেশের স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে চায়, তাদের হাতকে শক্তিশালী করতে পরিকল্পিত ভাবে বিরাজনীতি করণেরপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, দেশকে খুব খারাপ অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে সরকার। এটাকে রুখতে হলে আমাদের সব বিভক্তি ভুলেএক হতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চেয়ে সাংবাদিকের স্বাধীনতা বেশি প্রয়োজন। যেটা সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা বা লেখার স্বাধীনতা। কারণ মালিকের স্বাধীনতা আছে। মালিক আর সরকার জয়েন্ট ভেঞ্চারেচলে। কখনো মালিক সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করে, কখনো সরকার মালিকদের ব্ল্যাকমেইল করে। কারণ তারা নানারকম ব্যবসা করে। সংবাদপত্রে যারা লেখালেখি করে তারা চাকরি করে, যা দেয় তা করে। তাদের স্বাধীনতা নেই, তাদের স্বাধীনতা দিতে হবে।এটা ভবিষ্যতে আমার মনে হয়, সংবিধানে নিশ্চিত করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজ সংবাদপত্রের কালো দিবস। আবার আজকে দিনটা হলো আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস। এটি ওই দিনটার কাছে কীভাবে নিয়ে গেল আমি জানি না। সবার কাছে আমার বিনীত নিবেদন থাকবে, সংবাদপত্রের দলনের যে দিনটা সেদিন সংবাদপত্রের যারা কর্মী ছিলেন তাদেরকে সরকারের অধীনস্থ করে গৃহশ্রমিক বানিয়ে দেয়াহয়েছিল। সেই দিনটাকে একটা কলংকের দিন হিসেবেই আমরা যেন বিবেচনা করি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে দৃষ্টিআকর্ষণ করতে চাই যে, মিডিয়ার স্বাধীনতা বাক স্বাধীনতার জন্য যে আন্দোলন হবে এই আন্দোলন গণতন্ত্রের আন্দোলনের থেকে পৃথক কোনো আন্দোলন নয়। একই সমন্বিত আন্দোলন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যখন বিএনপি সরকার গঠন করবে আমরা একটা প্রেস কমিশন গঠন করতে চাই। যে কমিশনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সংবাদপত্র গণমাধ্যমের পুরো পরিস্থিতির একটা বিশ্লেষণ মূলক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। কারামিডিয়ার মালিক হয়েছে, কীভাবে মালিক হয়েছে, সাংবাদিকদের অবস্থা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবস্থা, সংবাদপত্র যে কালো আইন গুলো ঘিরে রেখেছে সেই কালো আইন গুলোর পর্যালোচনা, সবকিছুর রিপোর্ট আমরা চাই এই প্রেস কমিশনের মধ্য দিয়ে।এই দাবি আমি আজকে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে কাছে রাখছি।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতাসীন হয়েছে তখন প্রথমেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন পড়েছে সেটা কী পঁচাত্তর, কী৯৬, কী ২০০৯। তাদের প্রত্যেকটি শাসনে তাদের প্রথম টার্গেটে পরিণত হয়েছে গণমাধ্যম।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে পরিসংখ্যান আছে, গত ১২ বছরে ৪২ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ সাংবাদিক মোজাক্কির যেটা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন, বসিরহাটে। ২০২০ সালে ১৬৯ জন সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছেন। আর ১২ বছরে নিগৃহতের সংখ্যা দেড় হাজার। আমাদের কাছে পরিসংখ্যান আছে, সেই পরিসংখ্যান বলছে, ৯০ ভাগসাংবাদিকই নিগৃহীত হয়েছেন সরকারি দল প্রশাসনের হাতে। আর ১০ শতাংশ নিগৃহীত হচ্ছেন সমাজের পেশিশক্তির কাছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে আমরা একটা জিনিস দেখেছি তখনই সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ননির্যাতন চলে, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত আসে, ভোটাধিকার হরণ হয়।বাংলাদেশের মানুষ কেউ ভালো নেই। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে, মিডিয়ার যদি স্বাধীনতা চান, গণতন্ত্র যদি চাই তাহলে এইফ্যাসিবাদী সরকারকেনাবলতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সভাপতিত্বে মিডিয়া উপকমিটির সদস্যসচিব শ্যামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় গোল টেবিল আলোচনায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক . রেজোয়ানসিদ্দিকী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com