লকডাউনে শ্রমিকের মজুরি ও চাকরির নিশ্চয়তা দাবি
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু ও সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি এবং লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠা প্রকাশকরেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার এবং সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু।
সরকার নতুন করে ‘কঠিন লকডাউন’ ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে শনিবার (১০ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে শ্রমিকদের জীবিকা–বেতন–মজুরি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকার নতুন করে ‘কঠিন লকডাউন’ ঘোষণা করেছে, যাতে পোশাক কারখানাও বন্ধের ঘোষণা এসেছে, যাশ্রমিকের জীবন বাঁচানোর জন্য জরুরি।
তবে গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শ্রমিকদের জীবিকা–বেতন–মজুরি নিয়ে।
তারা বলেন, কঠোর লকডাউনে কেবল জনগণ ঘর থেকে বের হলো কিনা তাই নয়, একইসাথে সরকারকে জোরের সাথেমালিকপক্ষের ভূমিকা কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। মালিকপক্ষ যাতে শ্রমিকদের এক পয়সা বেতনও না কাটে বরং লকডাউনের বিপদকালে শতভাগ মজুরি নিশ্চিত করে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বছরের মতো লকডাউনে সরকারি–বেসরকারি কর্মকর্তারা বেতন পাবেন, সুযোগ সুবিধা পাবেন, কাজে যাবেননা কিন্তু শ্রমিকদের বেলায় উল্টো অবস্থা—এমনটা এবার শ্রমিকরা মেনে নেবে না। গত বছরের পরিস্থিতি যাতে আবারও তৈরি নাহয় এর জন্য সরকারকে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে নেতৃবৃন্দ জোর আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জীবন বাঁচাতে লকডাউনের সাথে সাথে পোশাক শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের বেতন মজুরির শতভাগ নিশ্চয়তার ঘোষণা দিতে হবে।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা আরও বলেন, গত বছর লকডাউনে বেতন কাটা, ছাঁটাই এবং লেঅফে শ্রমিকদের জীবন বিপর্যস্থহয়। কাজ হারায় সাড়ে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক। বহু কারখানা এখনো বন্ধ। বহু শ্রমিক কাজ ছেড়ে গ্রামে গেছে কিংবা বেকার হয়েছে। এখনও কোনো কোনো কারখানার শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতন পায়নি। করোনার সময় যখন সবার ঘরে থাকার কথা সেইসময় গত বছর শ্রমিকরা রাস্তায় রাস্তায় তাঁদের জীবিকা বাঁচাতে আন্দোলনে নেমেছিলো। গত বছরের পরিস্থিতি শ্রমিক এবংদেশবাসীর জীবনকে হুমকিতে ফেলে ছিলো এবং করোনার সংক্রম বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছিলো।
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরো বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও পোশাক শ্রমিকরা শতভাগ জনবল নিয়ে কারখানা চালু রেখেছে। কিন্তু অতীতের সেই দুঃসহ স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা ফেরত চায় না শ্রমিকরা। পোশাক শ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষরাই দেশের অর্থনীতি সচলরাখতে এবং বিকশিত করতে ভূমিকা রাখে। অথচ সরকার এবং মালিকপক্ষ এদের জীবনের পূর্ণ দায়িত্ব নিতে গড়িমসি ও অবহেলা করে।