আর পারছি না, ক্ষ্যামা দে মা লক্ষ্মী: অভিনেত্রীর কাছে আকুতি বিজেপি নেতার

0

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন আসার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি। সেই আসরে নেমে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে ‘ক্ষ্যামা দে মা লক্ষ্মী’ বললেন বিজেপির প্রবীণ রাজনীতিক তথা সাবেক ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়।  

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ঘটনার সূত্রপাত একটি বাংলা চ্যানেলে সায়নীর বক্তব্য নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে সায়নী বলেছিলেন, ‘‘যেভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানটিকে রণধ্বনিতে পরিণত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ভুল। উপরন্তু, এটি বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেও পড়ে না। ঈশ্বরের নাম ভালোবেসে বলা উচিত।’’

তার পরেই এক ব্যক্তি টুইটে আক্রমণ করেন সায়নীকে। তার দাবি, অভিনেত্রী দেশভাগের কথা ভুলে গিয়েছেন। দেশভাগের সময় মুসলিমদের ‘অপরাধ’-এর বিষয়টিও মনে করিয়ে দেন তিনি। এ নিয়ে টুইট-যুদ্ধে মাঠে নামেন তথাগত।

সায়নীকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, সায়নী ‘টাইপের’ মানুষকে ‘মূর্খ’ বলে মনে করেন। সেই তালিকায় যোগ করেন বামপন্থীদেরও। বলেন, “ছি! এ সব বলতে নেই। করুক না ওরা (মুসলিম) কিছু হিন্দু খুন ও মেয়েদের ধর্ষণ। হোক না সওয়া কোটি হিন্দু গৃহহীন, পথের ভিখারি। ওরাও তো মানুষ।”

সায়নী জানান, প্রথমে স্থির করেছিলেন এই ‘কাদা ছোড়াছুড়ি’-তে অংশগ্রহণ করবেন না। তার পরে অন্য কথা ভাবলেন। সায়নীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘তথাগত রায়ের সঙ্গে আমার কোনো পূর্বপরিচয় ছিল না। কিন্তু হঠাৎ আমাকে ট্যাগ করে আমার ‘টাইপ’ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। এর উত্তর দেওয়াটা জরুরি। আমি তার হাঁটুর বয়সী। কোন স্তরে নামতে চাইছেন তারা, এটা স্পষ্ট হয়ে গেল আমার কাছে।’’

টুইটে সায়নীর দাবি, দেশভাগের সময় কত জন হিন্দুর মৃত্যু হয়েছিল, সে হিসেব করে এখন যারা মুসলিমদের ‘মারব’ বলে শাসাচ্ছেন, তারাই আদপে ‘গান্ধী কলোনি’কে ‘গডসে কলোনি’ বানাবেন। সায়নীর বিশ্বাস, তারা ‘হিন্দুত্ব’ করতে গিয়ে ‘হিন্দুধর্ম’-এর কথা ভুলে গেছেন। দেশের মানুষের দৈন্যদশা দেখলেই বোঝা যায়, দেশবাসীর মঙ্গলের জন্য তারা কিছুই করছেন না। 

কে কত ‘বাঙালি’ আর কে কতটা ‘অবাঙালি’, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছে বেশ আগেই। বিধানসভা নির্বাচনে বাঙালিত্বের পরিমাণকে অন্যতম বিচার্য বিষয় বলেও ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে সায়নীর রোমান হরফে বাংলা লেখার প্রবণতা পছন্দ হয়নি তথাগতের। তাই অভিনেত্রীকে ‘আবোলতাবোল’ বলে দাগিয়ে দেন। তবে ইংরেজি হরফে বাংলা লিখেই টুইটের জবাব দিয়েছেন সায়নী। ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপালের ‘সামাজিক ও মানসিক সংকীর্ণতার’ পরিচয় পেয়ে হতাশ অভিনেত্রী লেখেন, “আপনার মতো জিনিস সত্যিই পশ্চিম বাংলার মানুষের কাম্য নয়।”

তবে বিজেপি নেতা মনে করছেন, ‘লেনিনের নিষিদ্ধপল্লিতে যাতায়াত ও সিফিলিসে মৃত্যু’-র বিষয়ে ‘গোপন তথ্য’ ফাঁস করে দিয়েছিলেন বলেই তার ওপর বামপন্থীদের ‘জাতক্রোধ’ আর তাই শুধু করুণার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। তবে ওই যুদ্ধ শুধু দুজনের মধ্যেই আটকে নেই। কোথাও সায়নীকে খুনের হুমকি বা ‘দু পয়সার নাচিয়ে’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কোথাও আবার তথাগত-সহ বিজেপি-কে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে তথাগত রায়ের শেষ টুইট বলছে, “আর পারছি না! ক্ষ্যামা দে, মা লক্ষ্মী!” এর পর সায়নী কোনো টুইট করেননি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com