আমিরাতের ‘আদব-কায়দা’ শিখতে বিশেষ প্রশিক্ষণ ইসরায়েলে

0

ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার চুক্তি বদলে দিয়েছে অনেক কিছু। দুবাইয়ে দিন দিন বাড়ছে ইসরায়েলিদের ভিড়। হঠাৎ কোনো পার্টি থেকে ভেসে আসছে হিব্রু ভাষার গান।

ডয়চে ভেলে জানায়, ২৬ নভেম্বর ইসরায়েলিদের নিয়ে প্রথম উড়োজাহাজ আসে দুবাইয়ে। পরের আট সপ্তাহে সাড়ে তিন ঘণ্টার বিমানযাত্রা করে দুবাইয়ে পৌঁছে যান ইসরায়েলের ৫০ হাজার মানুষ। এখন দুই দেশের মধ্যে চারটি সংস্থা দিনে ১৫টি করে ফ্লাইট চালায়।

আমিরাত এখন আর অল্প কিছু ইহুদির বাসস্থান নয়, বরং স্থানীয় ইহুদি ও পর্যটকদের নিয়ে গমগম করছে দুবাই। সদ্য খোলা কোশার (ইহুদি মতে অনুমোদিত খাবার) রেস্তোরাঁয় প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে। বিলাসবহুল হোটেলে বিশাল করে ইহুদিদের বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। ডিসেম্বরে ইহুদিদের ছুটির সময়ও হোটেলে অনুষ্ঠান হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা ব্রুজ খলিফার সামনের স্কয়ারে হিব্রু গান গাওয়া হয়েছে।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলিরা আমিরাতে গিয়ে কীরকম ব্যবহার করবেন, তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। যেমন প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া, চিৎকার করা আমিরাতে বরদাশত করা হয় না। সেখানে কাউকে অপমান করলে জেলে যেতে হয়।

আরও বলা হয়, কড়াকড়ি সত্ত্বেও ইসরায়েলের মানুষ দুবাইকে নিরাপদ মনে করেন। দুবাইতে সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে এবং সেখানে অপরাধের হার সবচেয়ে কম।

দুবাইতে যে এত ইসরায়েলের মানুষ আসছেন, তার একটা প্রভাবও পড়ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জনপ্রিয় এক ক্যাটারার কোশার কিচেন খুলে দিয়েছেন। আবু ধাবির পর্যটন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইহুদি সম্প্রদায় একটি চুক্তি করেছে। সেখানে কর্মকর্তাদের তারা প্রশিক্ষণ দেবে, যাতে তারা কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁকে কোশার কিচেনের সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে সবদিক খতিয়ে দেখতে পারেন।

তবে শুধু অস্থায়ী পর্যটকরাই আসছেন তাই নয়, দুবাইতে একটি ইহুদি স্কুল তৈরি হচ্ছে। ইহুদিদের চিরাচরিত ধর্মীয় স্নানের উৎসবের সঙ্গেও তারা পরিচিত হচ্ছেন। স্থানীয় ইহুদি লেভি ডাচম্যান তো সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন।

শুধু পর্যটন নয়, দুই দেশের চুক্তির প্রভাব বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে পড়ছে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে। দুই দেশই আইটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রকে খুব গুরুত্ব দেয়। হিরা কেনা-বেচার ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল বলে মনে করা হচ্ছে। দুবাই ডায়মন্ড এক্সচেঞ্জ ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের ডায়মন্ড এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তি করেছে। তার এক মাসের মধ্যেই তেল আবিবে ইসরায়েলের ডায়মন্ড ট্রেড সেন্টারের পাশে দুবাই এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধির অফিস চালু হয়ে গেছে।

ইসরায়েল থেকে আসা একাধিক পর্যটকের কভিড-১৯ সংক্রমণ থাকায় দুবাইয়ের হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে। লকডাউন থাকলে বাইরের দেশের মানুষকে ইসরায়েলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, তাই এখন যাত্রা একতরফা হচ্ছে। ইসরায়েল থেকে মানুষ বাইরে যাচ্ছেন এবং ঘরে ফিরছেন। বাইরের মানুষ ইসরায়েলে ঢুকতে পারছেন না। ফলে এখনো পর্যন্ত আমিরাতের অল্প কিছু মানুষই বাণিজ্যিক কারণে ইসরায়েল যেতে পেরেছেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com