স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সার্বজনীন করার লক্ষ্য বিএনপির

0

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বছরব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এরই মধ্যে সিনিয়র ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় কমিটি, আটটি বিভাগীয় কমিটি ও ২৫টি উপকমিটি গঠন করেছে দলটি।

তবে দলীয়ভাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্যোগ নিলেও বিষয়টিকে সার্বজনীন করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের মধ্যে সীমিত পরিসরে যতটুকু আয়োজন সম্ভব, তার সবটুকুই তারা দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে করতে চায় বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রমতে, বাংলাদেশ বিনির্মাণে আহ্বামানকাল থেকে চলে আসা স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ অবদান রাখা সব রাজনৈতিক দলের কিংবদন্তিতুল্য নেতাদের স্মরণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা এবং সব ধরনের আয়োজনে একটা সর্বজনীন চেহারা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে বিএনপির।

জানা গেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রথম বৈঠকে বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল— শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমসহ জাতির মহান নেতাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে।

সূত্রমতে, বিগত দিনগুলোতে মহান বিজয় দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোতে কেবল বিএনপিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধা বা ‘বিএনপিমনা’ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানো হতো। তবে সুবর্ণজয়ন্তীতে সব দলের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানোর উদ্যোগ নেবে বিএনপি। দলমত নির্বিশেষ সব মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ লক্ষ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) শাহজাহান ওমর বীর উত্তমকে আহ্বায়ক করে ‘মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা’ উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে যেসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে, তা হবে সার্বজনীন। দলীয় উদ্যোগে সব কিছু আয়োজন করা হলেও দলীয় সংকীর্ণতায় সেগুলো বাধা হবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে সব দলের মুক্তিযোদ্ধাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’

শুধু মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা নয়, দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যান্য আয়োজনও হবে দলনিরপেক্ষ ও সার্বজনীন— এমনটিই বলছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতিবিজড়িত স্থান, আলোকচিত্র, নথিপত্র, প্রামাণ্যচিত্র সংগ্রহ ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহন করবে না উদযাপন কমিটি। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় কোনো রাজনৈতিক খোলসে বন্দি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ক্ষেত্রেও আমরা দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে থাকব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হবে সার্বজনীনতার ভিতিত্তে।’

এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দলীয় ‘লোগো’  উন্মোচন করেছে বিএনপি। লাল, সবুজ, কালো ও হলুদ রঙের মিশ্রণে তৈরি লোগোতে স্লোগান করা হয়েছে— ’২৬ মার্চ ১৯৭১,  যেখান থেকে শুরু’। দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে— ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে শুরু হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। চলবে বছরব্যাপী। করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে আয়োজনের ব্যপ্তি ও বিস্তৃতি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com