টিকার ব্যাপারে বাংলাদেশকে নতুন করে যা জানালো সিরাম

0

ভারত সরকার বলছে, যে দুটি কোভিড ভ্যাকসিনকে তারা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে, সেই দুটি রপ্তানি করতে `কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি’।

ভারতের স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষন একথা জানিয়েছেন বলে কলকাতা থেকে খবর দিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী।

একই সাথে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী অফিসার আদার পুনাওয়ালার যে বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল, তিনিও বিবিসিকে জানিয়েছেন যে ভারতে বা বিদেশে বেসরকারি কোন সংস্থার কাছে টিকা বিক্রি না করতে পারলেও যে কোনও দেশের সরকার পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচির জন্য তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটি রপ্তানির ওপরে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

সেই হিসাবে তিনি জানান, বাংলাদেশের কাছে টিকা রপ্তানি করতে কোনরকম বাধা থাকছে না, কারণ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন যে ভারত থেকে কোভিড টিকা আনার ব্যবস্থাটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো করলেও টিকাদান কর্মসূচির অর্থায়ন ও পরিচালনা সরকারই করবে।

সিরাম ইনস্টিটিউট বিবিসিকে জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও মরক্কোয় তারা টিকা পাঠানোর কাজ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করতে পারবে বলে আশা করছে।

দু’দিন আগে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পুনাওয়ালা বলেছিলেন, তারা ভারতে শুধুমাত্র জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছেন এই শর্তে যে তারা বেসরকারি বাজারে এটি বিক্রয় করতে বা এটি রপ্তানি করতেও পারবে না।

রপ্তানি নিয়ে তার মন্তব্যের পর বিভ্রান্তি তৈরি হলে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি টুইট করে জানান যে সব দেশে টিকা রপ্তানির অনুমতি তাদের আছে।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারেও পুনাওয়ালা বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে টিকা ব্যবহারের যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে, তার শর্ত অনুযায়ী আমরা দেশে বা বিদেশে কোনো বেসরকারি সংস্থার কাছে ভ্যাকসিনটি বিক্রি করতে পারব না। কিন্তু কোনো দেশের সরকারি টিকাদান কর্মসূচির জন্য ভ্যাকসিন পাঠাতে পারব।’

সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহীর একটি বক্তব্য টিকা রপ্তানির ব্যাপারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার পর সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মঙ্গলবার নতুন ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

‘ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত’
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার করোনার সার্বিক পরিস্থিতি এবং টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে দিল্লিতে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছিল বলে জানাচ্ছেন সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী।

সেখানে তাদের বক্তব্যের পরে সাংবাদিকদের দিক থেকে প্রথম প্রশ্নটিই ছিল ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত।

স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষনের কথায়, ‘দুটি কোভিড ভ্যাকসিনের কোনটির রপ্তানির ওপরেই কেন্দ্রীয় সরকার কোনরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করে নি। এটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া দরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি মন্ত্রক এধরনের একটা কাল্পনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে: একটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং বাণিজ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্য মন্ত্রক অথবা বাণিজ্য মন্ত্রক – কোনটিই এধরণের নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এধরণের ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত।’

ভূষন আরো জানিয়েছেন ভারতে এ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মঙ্গলবার সিরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত-বায়োটেক, যে দুটি সংস্থার তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেয়েছে, তারাও একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

সেখানেও বলা হয়েছে যে তাদের উৎপন্ন কোভিড ভ্যাকসিন তারা বিশ্বের মানুষের উপকারে ব্যবহার করতে চায়। ওই বিবৃতিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী অফিসার আদার পুনাওয়ালারও নাম রয়েছে।

সিরাম জানিয়েছে, ভারতের ব্যবহারের জন্য পাঁচ কোটি টিকা প্যাকেটজাত করা হয়েছে এবং তা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। আরো পাঁচ কোটি টিকা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আছে।

সূত্র : বিবিসি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com