চাল, তেলের উচ্চমূল্যে বছর শুরু
করোনা বিপর্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২১ সাল। নতুন বছরটি কেমন যাবে, তা হয়তো এখনই বলা যাচ্ছে না। করোনায় কাজ হারানো মানুষের আর্থিক সঙ্কটই পিছু ছাড়ছে না। এই অবস্থায় বছর শুরুই হয়েছে চালের চড়া দাম ও ভোজ্য তেলের দর বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার গত সপ্তাহের তুলনায় মোটামুটি স্থিতিশীল বলে দাবি রাজধানীর খুচরা বিক্রেতাদের। কিন্তু আমন মৌসুমে চালের এমন চড়া দাম শঙ্কারও বটে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, নতুন বছরের প্রথম দিন শুক্রবার কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। যেখানে চালের চড়া দরের সঙ্গে ভোজ্য তেলের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে লিটারে অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তিন সপ্তাহ ধরে সরু চাল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকা, মাঝারি চাল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। মোটা চালের দামও রয়েছে প্রতিকেজি ৫০ টাকার ওপরে। প্রতিকেজি বাসমতি ৭০ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা, মিনিকেট ৬৪ টাকা, পাইজাম ৫০ টাকা ও জিরা চাল ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজারের একটি রাইস এজেন্সির কর্ণধার বলেন, “চালের দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তির দিকে। তবে গত সাত দিনে নতুন করে দাম বাড়েনি। এটা নতুন করে চাল আমদানি ও শুল্ক কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব। তাই আগামী দিনে মোটা চালের দাম কমে আসবে বলে মনে হচ্ছে। তবে বৈশাখ মাসে বোরো ধান আসার আগে চিকন চালের দাম খুব একটা কমবে না।”
গত সপ্তাহে খাদ্য মন্ত্রণালয় চালের আমদানি শূল্ক ৬৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।
কারওয়ান বাজারের কয়েকজন মুদি দোকানি দাবি করেছে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। তবে নতুন বছরের অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার আগের সপ্তাহের তুলনায় মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। এর মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমেছে বলে তারা জানিয়েছেন।
এক বিক্রেতা বলেন, “গত সপ্তাহে সয়াবিন তেলে দাম ছিল প্রতিকেজি ১১৫ টাকা। এই সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। আসলে তেলের দাম কয়েকমাস ধরে বাড়তি।”
পেঁয়াজের বাজারে দেখা যায়, প্রতিকেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪৪ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের এক পেঁয়াজের আড়তদার বলেন, নতুন দেশি পেঁয়াজের যোগান ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া ভারতও পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার তুলে নিয়েছে। নতুন বছরে এসব খবরে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে বলেই মনে হচ্ছে।
তবে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে সবজির দাম আরও কমেছে। দেশি আধাপাকা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে, শিমের কেজিও ৪০ টাকার মধ্যে রয়েছে। প্রতি কেজি শসা ও গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকায়; ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।