যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিনে বোমা বিস্ফোরণকারী কে এই অ্যান্থনি ওয়ার্নার?
উৎসবের দিন বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত সন্দেহভাজনের প্রতিবেশীরা তাকে একজন শান্তশিষ্ট ও অন্তর্মুখী মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে এমন খবর উঠে এসেছে।
শুক্রবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ বিস্ফোরণের প্রধান সন্দেহভাজন ৬৩ বছর বয়সী ওয়ার্নারকে বিস্ফোরিত সাদা রিক্রিয়েশনাল ভেহিকলটির (আরভি) মালিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিস্ফোরণের সময় ওয়ার্নার আরভিটির ভেতরে ছিলেন এবং বিস্ফোরণের সময়ই মারা যান। রোববার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান টেনেসির মধ্য জেলার মার্কিন আইনজীবী ডন কোচরান। তিনি জানান, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বিস্ফোরিত গাড়িতে তার উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
ঠিক কী কারণে অ্যান্থনি এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা এখনো উদঘাটন করতে পারেনি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। টেনেসি ব্যুরো অভ ইনভেস্টিগেশন অতীত রেকর্ড ঘেটে ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে অনেক পুরনো দু’টি মামলা খুঁজে পেয়েছে। যার মধ্যে একটি ছিল- মেয়াদোত্তীর্ণ গাঁজা বিক্রির দায়ে আশির দশকে টেনেসি ন্যাশভিলে মেট্রো পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, ইলেক্ট্রনিক্স ও অ্যালার্ম সিস্টেমে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বতন্ত্র কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ ওয়ার্নারকে প্রতিবেশীরা একজন শান্তশিষ্ট ও অন্তর্মুখী মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
প্রতিবেশীরা জানান, ওয়ার্নারের আরভিটি কয়েক বছর ধরে তার বাড়ির বাইরে পার্কিং করা ছিল। কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি নিজের বাড়ির উঠোনের চারপাশে একটি কাঠের বেড়া তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। পরে আরভিটি বেড়ার পেছনে পার্ক করেন।
ওয়ার্নারের দুই দশকের প্রতিবেশী স্টিভ শমলট ইউএসএ টুডে’কে জানান, ‘ওয়ার্নার পেছনের সারিতে পড়ে থাকা লোকজনের মতো ছিলেন, আমি জানি না, তবে মনে করি কিছু লোক তাকে হয়তো কিছুটা অদ্ভুত বলে অভিহিত করবে।’
শমলট বলেন, ওয়ার্নারের সাথে তার অল্প কিছু কথাবার্তা হয়েছিল। আরো বলেন, ‘তার বাড়িতে কাউকে কখনো আসতে বা যেতে দেখা যায়নি। তাকেও কোথাও যেতে দেখিনি। আমাদের যতদূর জানি তিনি একজন কম্পিউটার আসক্ত ব্যক্তি ছিলেন যিনি বাড়িতে বসে কাজ করতেন।’
শমলট ও তার স্ত্রীর মতে, ওয়ার্নার স্পষ্টতই কোনো রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। তার জানালায় বা সামনের বারান্দায়ও কোনো পতাকার চিহ্ন রাখেননি।
প্রতিবেশীরা টিভিতে বিস্ফোরণের ব্যাপারে খবরাখবর রাখছিলেন। কিন্তু এফবিআই এজেন্টরা ওয়ার্নারের বাড়িতে হানা দেয়ার আগ পর্যন্ত আরভিটা যে ওয়ার্নারের এমন কোনো যোগসূত্র মেলাতে পারেননি তারা।
মনে করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের পেছনে ওয়ার্নার একাই ছিলেন। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছিল এবং প্রায় ২০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সূত্র : ইউএসএ টুডে, আনাদোলু এজেন্সি