ইরানে বিজ্ঞানী হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নীরবতায় তেহরানের প্রতিক্রিয়া

0

ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিযাদেহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হওয়ার পর বিশ্বের বহু দেশ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিশ্বের বহু চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ও গবেষক মহলও এ ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করেছে। কিন্তু এমন অনেকে রয়েছে যাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

ইরানের বিচারবিভাগের মানবাধিকার বিষয়ক দফতরের প্রধান আলী বাকেরি কানি জাতিসংঘ মহাসচিব ও এ সংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কাছে লেখা আলাদা চিঠিতে ওই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এ নীরবতা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দান করবে এবং উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটাবে।

বাস্তবতা হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দাবিদার দেশগুলো তাদের অন্যায় আচরণের মাধ্যমে এটা প্রমাণ করেছে যে, সুযোগ পেলেই তারা ইরানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ আরোপ করার মাধ্যমে ইরানকেই সন্ত্রাসবাদের মূল হোতা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণ বলে তুলে ধরার চেষ্টা চালায়। ইরানের বিচারবিভাগের মানবাধিকার বিষয়ক দফতরের প্রধান আলী বাকেরি কানি তার ওই চিঠিতে সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী, বৈষম্যমূলক ও রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণের কথা উল্লেখ করে বলেছেন এর ফলে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

ইরানের জনগণের শত্রুরা বহুবার এটা দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা তাদের অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মতো ব্যক্তিকে হত্যা করতে পিছ পা হয়নি যে কিনা ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব সমর্থিত আইএস সন্ত্রাসীদের নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। সর্বশেষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিযাদেহকে হত্যার আগে আরো চার পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে ইরানের শত্রুরা। এতো বড় মাপের গবেষক ও বিজ্ঞানী হত্যার ঘটনা নিঃসন্দেহে ইরানের জন্য অনেক বড় আঘাত। কিন্তু তারপরও ইরানি জাতি শহীদদের পথে চলা অব্যাহত রাখবে।

জেনেভায় জাতিসংঘ দফতরে ইরানের প্রতিনিধি ইসমাইল বাকিয়ে হামানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানকে লেখা চিঠিতে ঠিক এ বিষয়টিই উল্লেখ করেছেন। ওই চিঠিতে তিনি কিট উৎপাদনসহ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতে গবেষণায় শহীদ মোহসেন ফাখরিযাদেহর অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইরানি জাতির ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে ওই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ অন্যায়ের ব্যাপারে নীরব থাকা উচিত হবে না কারণ এতে করে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও  এ ধরণের অপরাধ সংঘটিত হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দুঃখজনকভাবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সন্ত্রাসবাদের হুমকির ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী আচরণে নীরব রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের চাপে পড়ে তারা টু শব্দটিও করছে না। অথচ এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের পক্ষ থেকে শক্ত প্রতিক্রিয়া আসা উচিত ছিল। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com