লাদাখে শীতে কি চীন বেশি সুবিধা পাবে?

0

পূর্ব লাদাখের বিরোধপূর্ণ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখনো একমত হতে পারেনি ভারত ও চীন। ফলে আসন্ন ভয়ঙ্কর শীতের মধ্যেও সেখানকার পর্বত চূড়ায় সেনাদের অবস্থান করার বিষয়টি একরকম নিশ্চিত হয়ে গেছে।

গত সাত মাস ধরে চলা সীমান্ত সংঘাত নিরসনের আলোচনা এখন বলতে গেলে হিমাগারে। দুই দেশের সেনা কমান্ডার পর্যায়ে আট দফা আলোচনা করেও কোনো অর্থবহ অগ্রগতি হয়নি। ৬ নভেম্বর সর্বশেষ দফা আলোচনা হয়।

বৃহস্পতিবার একটি সূত্র বলে, পরস্পর-সম্মত প্রত্যাহারের সঠিক মডালিটি ও ধাপগুলো কিভাবে সাজানো হবে তা নিয়ে আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। চীন এখনো নবম দফা সামরিক আলোচনার তারিখ দেয়নি।

ভারতীয় সেনাদের আগে সরিয়ে নিতে হবে বলে দাবি করে আছে চীন। প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীর ও চুসুল এলাকায় গোপনে অভিযান চালিয়ে কিছু পর্বত চূড়া দখল করেছে ভারতীয় সেনারা। এসব চূড়া ভারতীয় পক্ষকে কৌশলগত সুবিধা দিচ্ছে বলে সেনাবাহিনীর তরফে দাবি করা হয়।

ভারত বলছে আগে প্যাংগং সো লেকের উত্তর তীর থেকে সেনা সরাতে হবে চীনকে। সেখানে মে মাস থেকে ৮ কিলোমিটার চওড়া একটি ভূখণ্ড চীনা সেনাদের দখলে। এটি ফিঙ্গার ৪ ও ৮-এর মধ্যবর্তী অঞ্চল।

এটাই বিরোধের মূল উৎস। একই সঙ্গে ফিঙ্গার এলাকা থেকে কতদূরে সেনারা সরে যাবে সেই প্রশ্নেরও নিষ্পত্তি হয়নি। এছাড়া গত সাত মাস ধরে কৌশলগত অবস্থানে থাকা দেপসাং সমভূমিতে ভারতীয় সেনাদের টহল আটকে রেখেছে পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি) সেনারা।

আট দফা আলোচনাকালে সংঘাতের এলাকা থেকে সেনা, ট্যাঙ্ক, কামান, সাঁজোয়া যান সরিয়ে নেবে বলে ব্যাপকভিত্তিতে সম্মত হয়েছিলো ভারত ও চীন। ফলে দ্রুত অচলাবস্থার নিরসন ঘটতে যাচ্ছে বলে ধারণা তৈরি হয়।

কিন্তু এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। যৌথ যাচাই ম্যাকানিজমেও দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি। সেখানে উভয় পক্ষের ৫০,০০০ হাজার করে সেনা অবস্থান করছে। ফলে ভারতীয় নিরাপত্তা মহলে এই ধারণা তৈরি হয়েছে যে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক-কূটনৈতিক পর্যায়ের হস্তক্ষেপ না ঘটলে নিকট ভবিষ্যতে এই মোতায়েনই হবে কার্যত অবস্থান।

ভারতের সিনিয়র অফিসাররা বলছেন, প্রত্যাহার নিয়ে কোনরকম তাড়াহুড়া করার দরকার নেই। বরং ভারতীয় সেনারা যেন কৌশলগত-অসুবিধাজনক অবস্থানে সরে না আসে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তাদের যুক্তি হলে পিএলএ সেনারাও একই পরিবেশে রয়েছে। তাছাড়া ভারতীয় সেনারা এ ধরনের উচ্চভূমিতে অবস্থান করতে বেশি অভ্যস্ত।

পূর্ব লাদাখের পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চতা ১৫,০০০ ফুটের বেশি। শীতকালে সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়। এছাড়া রয়েছে অক্সিজেন স্বল্পতা।

এক কর্মকর্তা বলেন, এলএসি যদি পাকিস্তানের মতো এলওসি-তে পরিণত হয় তাহলে আগামী শীতে ভারত আরো সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।

গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি লড়াইয়ে ২০ ভারতীয় সেনা ও অজ্ঞাত সংখ্যক চীনা সেনা নিহত হয়। তখন থেকে দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা চলছে।

সূত্র : টিওআই

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com