তুরস্ককে পরমাণু বোমা বানাতে সহায়তা করবে পাকিস্তান!

0

সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ ভারত। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন বেশ ক্ষুব্ধ করছে ভারতকে। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে এ নিয়ে।

গত ফেব্রুয়ারিতে এরদোগান আরেক দফা ভারতকে ক্রুদ্ধ করেন পাকিস্তান পার্লামেন্টে এ কথা বলে যে কাশ্মির ইস্যু পাকিস্তানের যত কাছে, আমাদেরও তত কাছে। তুরস্ক সেখানকার নির্যাতনের বিষয়ে সোচ্চার থাকবে। তিনি কাশ্মিরি মুসলিমদের সংগ্রামকে গ্যালিপলিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তুর্কি লড়াইয়ের সাথে তুলনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরদোগানের মন্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে অভিহিত করেন।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে কাশ্মির প্রশ্নে পাকিস্তানকে সমর্থন করে তুরস্ক। এর বিনিময়ে পাকিস্তান ১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসে তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপের প্রতি সমর্থন দেয়। এসব বিষয় আগে থেকে থাকলেও তা ভারতকে ক্রুদ্ধ করেনি। বর্তমানে এরদোগান যেভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন করছেন, তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে আছে ভারত।

এর প্রতিক্রিয়ায় ভঅরত ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য জাহাজ নির্মাণের ২.৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল করার হুমকি দিয়েছে। তাছাড়া তুরস্কের ঐতিহাসিক শত্রু আর্মেনিয়ার কাছ থেকে রাডার কেনার জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে ভারত। তবে ভারত সম্ভবত তুরস্কের সাথে চুক্তিটি বাতিল করবে না। দেশটি সম্ভবত পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের সম্পর্ক শিথিল করার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।

ইসলামাবাদভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তাবাদল্যাবের প্রধান মোশাররফ জাইদি বলেন, ভারত মনে করে, তার অর্থনৈতিক শক্তি ও আকারের কারণে সে যেকোনো ধরনের জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে থাকতে পারে। কিন্তু তুরস্ক তা গ্রাহ্য করছে না দেখে ভারত বিস্মিত হয়েছে।
ভারত ও তুরস্কের বাণিজ্য ভারসাম্য ব্যাপকভাবে নয়া দিল্লির অনুকূলে। জাহাজের চুক্তিটি বরং কিছুটা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
তবে ভারত যাই মনে করুক না কেন, উপমহাদেশের মুসলিমদের ওপর তুর্কি প্রভাব এখনো বেশ প্রান্তিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। বরং উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রভাবই অনেক বেশি। সেখানে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কোটি কোটি লোক বাস করে। তাছাড়া এসব দেশের মুসলিম প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্নভাবে দান-খয়রাতও করে থাকে উপসাগরীয় দেশগুলো।

আবার পাকিস্তানের সম্ভাবনাময় বাজারের কারণেও দেশটির সাথে তুরস্কের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। ২০১৮ সালে পাকিস্তানের কাছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার বিক্রির জন্য ১.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমানগুলো আধুনিকায়নের কাজেও তুরস্ক সহায়তা করছে। তাছাড়া তুর্কি টিভি সিরিয়াল, চকোলেটের মতো পণ্যও পাকিস্তানে বেশ সমাদৃত।

আবার পাকিস্তানে এমন কিছু আছে, যা কামনা করতে পারে তুরস্ক। আর তা হলো পরমাণু অস্ত্র। এরদোগান গত সেপ্টেম্বরে পরমাণু শক্তি লাভের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তেলআবিবভিত্তিক ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো গালিয়া লিন্ডেনস্ট্রাস বলেন, পাকিস্তান ও তুরস্ক পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে সহযোগিতামূলক অবস্থান গ্রহণ করতে পারে।
তবে তুরস্ককে পরমাণু অস্ত্র বানাতে পাকিস্তান ততটা সহায়তা নাও করতে পারে। পাকিস্তানে অনেকে মনে করে, তুরস্ক পরমাণু বোমা বানাতে পারলে মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পরমাণু শক্তিধর হিসেবে পাকিস্তানের মর্যাদা নষ্ট হয়ে যাবে।

সূত্র : আল-মনিটর

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com