বর্তমান প্রজন্মকে ‘প্রকৃত ইতিহাস’ জানাবে বিএনপি

0

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দেশের বর্তমান প্রজন্মকে ‘ইতিহাস বিকৃতির’ বিষয়ে অবহিত করতে হবে বলে মনে করে বিএনপি। ‘বর্তমান সরকার দেশের ইতিহাস বিকৃত করছে এবং মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ছোট করছে। এসব মোকাবিলা করতে তরুণ প্রজন্মের সামনে বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস তুলে ধরার পক্ষে’ মত দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিএনপির উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভায় গতকাল শনিবার এসব কথা উঠে আসে নেতাদের বক্তব্যে।

উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতারাও বক্তব্য দেন।

ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এমন এক সময়ে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের পরিকল্পনা করছি, যখন দেশের স্বাধীনতাই বিপন্ন হয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনা, গণতন্ত্র একেবারেই নেই। সমগ্র দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে।’তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে। সেই বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। আমাদেরকে নুইয়ে পড়লে চলবে না। ভবিষ্যত যে স্বপ্ন সেটা আলোচনার মধ্য দিয়ে এগুতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের বিভিন্ন আলোচনা, বিভিন্ন প্রকাশনা, বিভিন্ন ডকুমেন্টেশনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার এই একটা সুযোগ আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।’

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল বিএনপি। মুক্তিযোদ্ধাদের দল বিএনপি।’

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘উদযাপনের একটি থিম ঠিক করতে হবে। তিনটি বিষয়ের সেমিনার করা উচিৎ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারী-শিশু নির্যাতন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর আলোচনা সভা করতে হবে। দুর্নীতি, গণতন্ত্রের সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের ১৯ দফাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করতে হবে। তাহলে একটি পরিবর্তন আসবে। আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে ছোটো করার চেষ্টা করছে। এগুলো আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোন দল আছে, যে দলের মহাসচিব সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা, যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শৈশবে মায়ের সঙ্গে কারাঘারে ছিলেন।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘কালুরঘাটকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করা দরকার। সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে যেসব প্রকাশনা বের হবে, সেগুলোকে স্তরে স্তরে পৌঁছে দিতে হবে।’

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘ছোটদের জন্য জিয়াউর রহমান বিষয়ে বই বের করতে হবে।’

সুর্বণ জয়ন্তীর বিষয়টি উল্লেখ করে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। পৃথক-পৃথক অ্যাকশন প্ল্যানের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স প্রস্তাব করেন, মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিফলকে সভা করা যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধণা দিতে হবে। ডকুমেন্টারি করতে হবে, যার যার অবদান আমরা তাকে দিতে চাই।

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমাদের একাত্তরকে আওয়ামী লীগকে যে ছিনতাই করেছে তা বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে এই সুবর্ণ জয়ন্তীর মাধ্যমে।’

এই বৈঠকে কীভাবে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী বছরব্যাপী করা যায় তার কর্মকৌশল ও প্রস্তাবিত কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৈঠকে জাতীয় কমিটির বাইরে একটি স্টিয়ারিং কমিটি এবং অর্থ, সেমিনার-সিম্পুজিয়াম, ব্যবস্থাপনা, দফতর, প্রচার, প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়াসহ বিভিন্ন উপকমিটি গঠনের বিষয়ে নিয়েও আলোচনা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা, পোস্টার ও লিফলেট প্রকাশও করবে বিএনপি।

স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান, মনিরুল হক চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিনু, মামুন আহমেদ, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মাহবুবে রহমান শামীম, শামা ওবায়েদ, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, মহিদুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, আশরাফ হোসেন উজ্জ্বল, গৌতম চক্রবর্তী, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আনোয়ার হোসেন খোকন, আরিফুল হক চৌধুরী, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, মহানগর উত্তর বিএনপির মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com