ভারত ‘সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা দেশ’, অকাট্য প্রমাণ পাকিস্তানের হাতে

0

পাকিস্তান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে একটি বিস্তারিত ডসিয়ার প্রকাশ করে ভারত যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসে মদত দিয়ে থাকে তা দৃঢ়ভাবে প্রমাণ করেছে। এ সময় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্বীকৃত আন্তর্জাতিক কাশ্মীর বিরোধ, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে (সিপিইসি) প্রক্সি যুদ্ধ করার প্রমাণ তুলে ধরা হয়। এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো, এই খারাপ আচরণের কারণে ভারতের বিরুদ্ধে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) ও এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য সংস্থার অবরোধ আরোপ করা হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া।

চলতি বছরের দিওয়ালি প্রতীকীভাবে উজ্জ্বল হয়নি এই অঞ্চলে ভারতের অন্ধকার কার্যক্রম সম্পর্কে পাকিস্তানের আলোকপাত করার কারণে। এসব দাবি নতুন কিছু নয়। তবে নতুন হলো এবার পাকিস্তান বিস্তারিত প্রমাণসহ অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছে।

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কঠিন প্রমাণ

পাকিস্তানের ভাষ্যানুযায়ী, আফগানিস্তানে ভারতের কূটনৈতিক স্থাপনাগুলো বালুচ, পশতু, আইএসআইএসসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ দিতে ব্যবহৃত হয়। ইসলামাবাদ প্রমাণ হিসেবে নাম, তারিখ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ফোন নম্বর ও অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্য প্রকাশ করে জানায় যে ভারত এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কাজ করে যাচ্ছে, তারা সত্যিই দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র। তাদের আচরণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তদন্ত করা উচিত। 

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব কেন?

পাকিস্তানের কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক ভারতকে বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। কারণ ভারতই আগে এসব অভিযোগ উত্থাপন করত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এখন পাকিস্তানই অভিযোগ করছে এবং প্রমাণসহকারে। কিন্তু অভিযোগ করার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতায় বোঝা যাচ্ছে যে তারা এই অভিযোগ নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে আছে এবং কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা উচিত, তা বুঝতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মতো প্রভাবশালী অনেক দেশের সাথে ভারতের অংশীদারিত্ব রয়েছে। এসব দেশ এখন ভারতের দুর্বৃত্ত আচরণের কারণে অস্বস্তিতে রযেছে। অবশ্য এসব দেশের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

ভারত-চীন সম্পর্কে অপূরণীয় ক্ষতি

আত্ম-স্বার্থের কারণে অতীতে ভারতের অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রমাণের ভিত্তিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখিয়েছে, পাকিস্তানের অভিযোগের ভিত্তিতে তা প্রদর্শন করবে না।

কিন্তু তা সত্ত্বেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে এসব প্রমাণ উত্থাপনের ফলে চীন-ভারত সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা দেখার বিষয়। তবে সাথে ভারত-চীনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ এবং ক্রমাগত তীব্র হতে থাকা স্নায়ুযুদ্ধের অবস্থাও মাথায় রাখতে হবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের হাইব্রিড সন্ত্রাস যুদ্ধের কারণে চীনের সবচেয়ে বড় কৌশলগত স্বার্থ হুমকির মুখে পড়ে গেছে। উল্লেখ্য, ভারত চাচ্ছে গিলগিট-বাল্টিস্তান ও বালুচিস্তানের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে সিপিইসির উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে জটিলতা সৃষ্টি করা।

বস্তুত, এই ডসিয়ার প্রকাশের সময়টি দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাথে সম্পর্কিত। তবে বলা যায়, এই ডসিয়ার প্রকাশ পাকিস্তানি কূটনীতির নতুন ধাপের সূচনা করেছ।

ইসলামাবাদ আস্থার সাথে ভারতের হাইব্রিড যুদ্ধের বিষয়টি প্রমাণ করেছে। আর সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বলা যায়, এই ডসিয়ারের বিপুল প্রভাব রয়েছে। সম্ভবত ভারত-চীন সম্পর্ক আর কখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসবে না। কারণ বেইজিং ভাবতে শুরু করেছে যে ওয়াশিংটন হয়তো সিপিইস প্রশ্নে নয়া দিল্লির প্রক্সি যুদ্ধে গোপনে সহায়তা প্রদান করছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com