ইরানে ঢুকে ইসরাইলি গোয়েন্দাদের আল কায়েদা নেতা হত্যায় তোলপাড়

0

আল কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতাকে ইরানে ঢুকে হত্যা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে তিন মাস আগে গত ৭ আগস্ট ইরানের রাজধানী তেহরানে হামলা চালিয়ে ইসরাইলি আততায়ীরা তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে গত শুক্রবার সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আবু মুহাম্মদ আল মাসরি নামের ওই আলকায়েদা নেতাকে মোটরসাইকেলে আসা দুই আততায়ী গুলি করে হত্যা করে। তবে কোনো দেশের সরকারই এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেনি। আর আল কায়েদার তরফ থেকেও তার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয়নি।

তা ছাড়া তেহরানে ইসরাইলি গোয়েন্দাদের হাতে আবু মুহাম্মদ আল মাসরি নিহত হওয়ার করার খবর প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। গতকাল শনিবার ইরান সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে এমনটি জানানো হয়। ইরান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরানের মাটিতে কোনো আল কায়েদার জঙ্গি ছিল না। মিসরীয় বংশোদ্ভূত আলকায়েদা নেতা আবু মুহাম্মদ আল মাসরি। গোষ্ঠীটির বর্তমান নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হয় তাকে। আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের একজন মাসরি। নিজের মেয়ের সাথে ওসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেনের বিয়েও দিয়েছিলেন তিনি।

আল কায়েদার ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ মাসরিকে ১৯৯৮ সালে আফ্রিকার কেনিয়া ও তানজানিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে দু’টি দূতাবাসে বোমা হামলার অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলা হয়। আয়মান আল জাওয়াহিরির পর তিনিই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীটির পরবর্তী শীর্ষ নেতা হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে ইসরাইলি চররা তাকে হত্যা করেছে বলে অনুমান করা হলেও হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক কী ধরনের ভূমিকা ছিল তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরাইল বা অন্য কোনো দেশের সরকারও এখন পর্যন্ত মিসরীয় বংশোদ্ভূত এ নেতাকে হত্যার দায় স্বীকার করেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন এক কর্মকর্তা নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছ থেকে এ প্রসাথে প্রতিক্রিয়া চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মাসরি ২০০৩ সাল থেকে ইরানের ‘হেফাজতে’ থাকলেও তেহরানের উপকণ্ঠে ২০১৫ থেকেই তাকে অবাধে বসবাস করতে দেখা যাচ্ছিল বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

তবে ঘটনার পর ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গুলিতে হাবিব দাউদ নামে লেবাননের এক ইতিহাসের অধ্যাপক ও তার ২৭ বছর বয়সী মেয়ে মরিয়ম নিহত হয়েছে। লেবাননের সংবাদভিত্তিক চ্যানেল এমটিভি ও ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে দাউদ হিজবুল্লাহর সদস্য ছিলেন বলে জানানো হয়।

পরে ইরান ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন লেবানিজ কর্মকর্তা জানান, তারা এর আগে কখনোই হাবিব দাউদ নামে কারো নাম শোনেননি। লেবাননের সংবাদমাধ্যমে সেসময় দেশটির ইতিহাসের কোনো অধ্যাপকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তেমন কিছু দেখা যায়নি। লেবাননের সব ইতিহাসের অধ্যাপকের তালিকায় প্রবেশাধিকার রয়েছে এমন এক গবেষক জানিয়েছেন, হাবিব দাউদ নামে কোনো নথি তিনি দেখেননি। রয়টার্স ও নিউ ইয়র্ক টাইমস

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com