বাইডেনকে নিয়ে যে সমস্যায় পড়েছে ভারত

0

নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চীন–নীতি কি ট্রাম্প জামানার মতোই ‘‌র‌্যাডিক্যাল’‌ হবে?‌ নাকি মাঝারি অবস্থান নেবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট?‌ তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন ট্রাম্পকে বারবারই বলতে শোনা গেছে, ‘‌বাইডেন ক্ষমতায় এলে আমেরিকা দখল নেবে চীন।’‌ জুনিয়র ট্রাম্পেরও আশঙ্কা, ক্ষমতায় এলে ‌চীনের প্রতি সুর নরম করবেন বাইডেন।‌ যদিও বাবা–ছেলের এই আক্রমণকে নির্বাচন জয়ের কৌশল হিসেবেই দেখছেন কূটনীতিকরা। কারণ, চীনের বিরুদ্ধে ‘‌বিশৃঙ্খল’‌ পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বেশ কয়েকবার কাঠগড়ায় তুলেছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট। জিনপিং–কেও ‘‌ঠগবাজ’ বলতে শোনা গেছে তাকে।

চীনের কমিউনিস্ট সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে লেখা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন হয়ে প্রথম কয়েক মাস হালচাল বুঝে নেয়ার চেষ্টা করবেন বাইডেন। ট্রাম্পের মতো ‘‌উচ্ছৃঙ্খল’‌ হবেন না। বরং উত্তেজনা কমাতে অনেক বেশি সংযত হবেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব গুছিয়ে নিয়েই মিত্ররাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। বাইডেন ক্ষমতায় আসার অর্থ চীনের জন্য আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে, মনে করছে চীনা কূটনীতিক মহলের একাংশ। আসলে ওবামা জমানার শেষ থেকেই চিড় ধরতে শুরু করেছিল বেইজিং–ওয়াশিংটন সম্পর্ক। সেই প্রবণতাকেই অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন ট্রাম্প। হিমালয় ও ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনা আগ্রাসনের জবাবে কী পন্থা অবলম্বন করবেন বাইডেন, সে দিকে বিশেষভাবে নজর থাকবে ভারতের। তবে মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশের ধারণা, চীনকে দমাতে আমেরিকা, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ফের শুরু হওয়া চতুর্দেশীয় অক্ষের আলোচনা বাইডেন আমলে নতুন মাত্রা পাবে।

উল্টা দিকে ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস যে মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতি এবং সদ্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বড় সমালোচক, তাও কূটনৈতিক মহলের অজানা নয়। তাই আগামীদিনে চীন–মার্কিন সম্পর্ক কোনদিকে গড়ায়, তা পর্যবেক্ষণ করেই ঘুঁটি সাজাতে হবে ভারতকে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এক্ষেত্রে উইঘুরদের প্রতি চীনা কমিউনিস্ট সরকারের আচরণ এবং সে বিষয়ে পাকিস্তানের দৃষ্টি এড়ানোর প্রবণতাও প্রভাব ফেলবে মার্কিন বিদেশনীতিতে।

শুধু পররাষ্ট্রনীতিই, ট্রাম্প জমানায় চীন–মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্কে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে পারেন বাইডেন। চীনা পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হতে পারে। তবে ট্রাম্প আমলের বর্ধিত আমদানি শুল্ককেই হাতিয়ার করে আলোচনায় বসবেন বাইডেন, লেখা হচ্ছে গ্লোবাল টাইমসে। পাশাপাশি চীনা বিশেষজ্ঞদের দাবি, জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে টিকটক এবং উইচ্যাটের মতো চীনা সংস্থার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ট্রাম্প সরকার, তা কিছুটা শিথিল করতে পারেন বাইডেন। তবে চীনা টেলিকম দৈত্য হুয়েই–কে নিয়ে মত বদলাবেন না তিনি।

কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, বাইডেন শপথ নেবেন ২০ জানুয়ারি। ট্রাম্পের হাতে এখনো প্রায় ৭০ দিন রয়েছে। এই সময়ে কতটা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি, সেদিকে নজর কূটনীতিকদের। একাংশের দাবি, দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান ইস্যুতে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি, যা বাইডেনের পক্ষেও সামাল দেয়া মুশকিল হতে পারে। ‌‌‌

সূত্র : আজকাল

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com