‘সংসদে যুবকদের প্রতিনিধিত্ব ০.৩ ভাগ’
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাকের পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. সায়েম আমীর ফয়সল বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনীতি, বিদ্বেষ, দুর্নীতি, খুন এবং দলীয়করণের সমার্থক। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭০ ভাগেরই বয়স ৩৫ এর নিচে। অথচ একজন সংসদ সদস্যের গড় বয়স ৬০। ৩০ বছরের কম বয়সী সংসদ সদস্যদের বিশ্ব র্যাকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৬তম। তার অর্থ দাড়ায়, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে যুবকদের প্রতিনিধিত্ব মাত্র শতকরা ০.৩ ভাগ। আমাদের শতকরা ৬৫ ভাগ সংসদ সদস্যই ব্যবসায়ী। বিশাল ব্যাংক ব্যালেন্সের অধিকারী এ সব ব্যবসায়ীরা যদি আমাদের সংসদকে ডমিনেট করে সেক্ষেত্রে আমরা কিভাবে তরুণ যুবকদের ক্ষমতার বলয়ে আত্মীকরন করতে পারি।
ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব এশিয়ান পলিটিক্যাল পার্টিস (আইসিএপিপি) এর সন্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে বক্তৃতাকালে তিনি এ সব কথা বলেন। ১৯টি দেশের ৩২টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ এ সন্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
ড. সায়েম আমীর ফয়সল বলেন, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ও প্রবেশের ধারাকে আমরা পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করতে পারি। (১) বংশীয় রাজনীতি; আত্মীয়করণ (২) ব্যবসায়ী, টেন্ডারপেনারশীপ; যা সংক্ষিপ্ত সময়ে একজনকে বিত্তশালী করে তোলে। পরবর্তীতে তারা বিত্তের বিনিময়ে পদ পদবী কিনে নেয়। (৩) সেলিব্রিটি মর্যাদা; যেখানে খ্যাতি এবং সেলিব্রেটি মর্যাদা রাজনীতিতে প্রবেশের মাধ্যম হয়। (৪) সরকারি আমলা এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যক্তিবিশেষের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রবেশ এবং (৫) ছাত্র রাজনীতি: ক্যারিয়ার হিসাবে ক্ষমতার বলয়ে পৌঁছাতে তৃণমূল থেকে রাজনীতি শুরু করতে হয়।
জাকের পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশে এখন যুবকদের বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে শতকরা ৪৮ ভাগ। শিক্ষিত বেকার তরুণের হার শতকরা ৩৩ ভাগ। কৃষি খাত থেকে শতকরা ৮০ ভাগ কর্মসংস্থান হয়। আমাদের অধিকাংশ কর্মসংস্থান হয় ব্লু কলার ওয়ার্কারদের জন্য। ফলে হোয়াইট কলার তরুণ এবং শিক্ষিত তরুণদের বেকার থাকতে হয়।
এ সমস্যার সমাধানে ড. সায়েম আমীর ফয়সল বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের উচিত যুব কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গঠন করা। জাতীয় বাজেট থেকে এ মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া উচিত। যাতে করে দেশ জুড়ে স্টার্টআপ উদ্যোক্তা তৈরি হয় এবং দ্রুত বিকাশ লাভ করে। এতে করে এসব স্টার্টআপের জন্ম ও বিকাশে সরকারের অর্থায়ন হবে বীজ বপনের মতো। এই উদ্যোগ কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং একইসাথে তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি করবে। আর এটাই হবে চলমান যুব বেকারত্ব সংকট মোকাবেলার দৃশ্যমান কার্যকর কর্ম পরিকল্পনা। এতে করে বাংলাদেশ একটি স্টার্টআপ নেশনে পরিণত হতে পারে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং সম্পদের কার্যকর পুর্নবন্টন অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।