আ.লীগ সরকার বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দেশে একব্যাক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে: ফখরুল

0

আওয়ামী লীগ সরকার ‘বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে’ দেশে একব্যাক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এই মন্তব্য করেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র জনগনকে বোকা বানানোর জন্য তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা, প্রকৃতপক্ষে একব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। আমরা অনেক বলেছি, মানববন্ধন, মিছিল, হরতাল বহু কিছু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। কারণ তারা বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে।”

সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘অনেক হয়েছে, এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা পরিস্কারভাবে জানাতে চাই- অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অবিলম্বে জনগনের চোখের ভাষা পড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যাথায় জনগনের উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে সেই ঢেউয়ে আপনারা সবাই ভেসে যাবেন।”

জনগনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, “আপনারা আর নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন না। যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে আজকে যদি আমরা প্রতিবাদ না করি, রুখে না দাঁড়াই তাহলে ১৯৭১ সালের আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা যে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের জন্যে লড়াই-সংগ্রাম করেছিলাম, যে গণতন্ত্রকে আমরা ছিনিয়ে নিয়ে আসছিলাম সেই গণতন্ত্রকে তারা আবার হরণ করেছে। সুতরাং আমাদের সবাইকে আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে, অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”

‘দানবীয়-হাইব্রিড-স্বৈরাচারী-পুতুল সরকারের’ বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষ জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহবানও জানান তিনি।

‘ভিন্নমতকে স্তব্ধ করতে চায় তারা’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য তারা (সরকার) আজকে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ যারা ভিন্নমত পোষণে করে লেখালেখি করে, সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো কথা বলে তখনই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। যে মামলাতে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী সাহেবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা একটা মিথ্যা অপবাদ, একটা অপব্যাখ্যা এবং সেই সঙ্গে আইনের একটা অপব্যাখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে বিনা জামিনে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।”

‘‘এটা একটি বিষয় নয়, অনেক সাংবাদিককে আজকে নির্যাতন করা হচ্ছে, নিপীড়ন করা হচ্ছে, সাংবাদিকদের হত্যা করা হয় তার কোনো বিচার হয় না। আজকে সাংবাদিকরা লিখতে ভয় পান কারণ যে আইন করা হয়েছে সেই আইনগুলোর কারণে তারা আর লিখতে সাহস করেন না।সারাদেশে একটা ভয়ের, একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে- রেইন অব ট্রেরর এবং সেটা করে তারা জোর করে বন্দুকের জোরে ক্ষমতার জোরে রাষ্ট্রযনন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা আজকে ক্ষমতায় টিকে আছে।”

অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের মুক্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান ফখরুল।

‘নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে এই নির্বাচনকে তাদের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্যে। তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে। নির্বাচনের নামে তারা আজকে ত্রাস সৃষ্টি করেছে।”

‘‘একটা প্রমাণ আমি দিচ্ছি। ঢাকা-১৮ উত্তরাতে যে উপনর্বিাচন হচ্ছে সেই নির্বাচনে আমাদের দলের একজন নেতা মোস্তফা যিনি কমিশনার প্রার্থী হয়েছিলেন গত রাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে আক্রমণ করে ভাংচুর করেছে। গতকাল সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থী রেজা সাহেবকে (সেলিম রেজা) সারাদিন ঘরের মধ্যে আটক করে রাখা হয়েছিলো।”

সংগঠনের নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে ছড়াকার আবু সালেহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল করীম, শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, জাসাসের রফিকুল ইসলাম প্রমূখ পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com