‘টর্চার সেলে’ আটকে টাকা আদায় ছিল আয়ের উৎস
কখনো নির্যাতন করেন। আবার কখনো ইয়াবা কিংবা অস্ত্রের ছবি তুলে লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সায়মুল হক কাজেমী ওরফে নিয়াজ। গতকাল মঙ্গলবার নগরের বাকলিয়া মাষ্টারপুল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এ তথ্য জানতে পারে। পরে তাঁর টর্চার সেলে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সায়মুল তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী দিদারুল হক কাজেমী ওরফে কিরিচ বাবুলের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় ২৭টি মামলা রয়েছে। আর ছেলে সায়মুলের বিরুদ্ধে রয়েছে ১২টি মামলা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, মাষ্টারপুল এলাকায় সায়মুলের একটি টর্চার সেল রয়েছে। সেখানকার ভাসমান ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন লোকজনকে টর্চার সেলে আটকে রাখেন। কাউকে নির্যাতন চালিয়ে টাকা আদায় করেন। আর কাউকে ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে ছবি তোলেন। এগুলো প্রচারের হুমকি দিয়ে টাকা কেড়ে নেন। এ ছাড়া কিশোর গ্যাং, চোর, ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত সায়মুল। ওই এলাকায় ছিনতাই, চুরির পর তাঁকে ভাগ দিতে হয়। আর কেউ গ্রেপ্তার হলে জামিন থেকে শুরু করে যাবতীয় দেখভাল করেন তিনি। নারী চোরের দলও রয়েছে তাঁর। তাঁরা ক্রেতা সেজে নগরের টেরিবাজার, রেয়াজউদ্দিন বাজারসহ বিভিন্ন শপিং সেন্টারে যায়। দোকানিকে কয়েকজন জিনিসপত্র দেখার ভান করে ব্যস্ত রাখেন। বাকিরা মালামাল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কয়েক মাস আগে গ্রেপ্তার একটি চক্র পুলিশকে তাঁদের দলনেতা সায়মুল জানিয়েছে। সায়মুল এলাকায় কিশোর গ্যাং তৈরি করে মাদক ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সায়মুলকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর টর্চার সেলে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর ভূমি দখল করে আসছেন। কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে নির্যাতনের শিকার হতো। মাষ্টারপুল এলাকায় কয়েকটি কিশোর গ্যাংসহ চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইকারী গ্রুপের ৩০ থেকে ৪০ জন সদস্যের নেতৃত্ব দেন সায়মুল।
স্থানীয় লোকজন জানায়, মাষ্টারপুল বাবুল কলোনির চারপাশে ঘেরাও দিয়ে মাদক ব্যবসা করে আসছেন সায়মুল।