যাদের খাটের নিচে ত্রাণের সামগ্রী পাওয়া যায় এমন সরকারকে জনগণ বয়কট করেছে: নজরুল
‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড’র বিধানের বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘ধর্ষণের মতো অপরাধের কঠিন সাজা হওয়া উচিৎ বলে আমরাও মনে করি। কিন্তু ধর্ষক যখন ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংযুক্ত থাকে তখন এই আইনের প্রয়োগ কতটুকু যথাযোগ্য হবে, তা চিন্তার বিষয়। এ ধরনের জঘন্য অপকর্মের সাথে যখন সরকারি দলের লোকজন সংযুক্ত থাকে তখন আইন যতো কড়াকড়িই হোক না কেন তার বাস্তবায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা জনগণের মাঝে থেকেই যায়। আমরা আশা করবো, এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হবে এবং ধর্ষণের অভিশাপ থেকে দেশ মুক্ত হবে।’
গতকাল সোমবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভার পর্যন্ত কোটিপতি হয়ে যায়। আর সেই বিভাগের প্রশংসা করতে হবে? তাহলে কোন বিভাগ আর যোগ্যতা প্রমাণের জন্য চেষ্টা করবে? ট্রাম্প যে চিকিৎসা পাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণও বাকি সেই চিকিৎসা পাচ্ছে। আমার কাছে অবাক লাগে আমাদের মন্ত্রী সাহেবরা শিক্ষিতলোক হয়ে কীভাবে এরকম কথা বলেন? তারা কষ্টের মধ্যে মানুষকে হাসায়।’
তিনি বলেন, ‘তাদের (মন্ত্রীদের) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কাজের মাধ্যমে মানুষকে সুখ দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। কাতুকুতু দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তো তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। আমাদের উচিৎ, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা দেশকে স্বধীন করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা একদলীয় স্বৈরশাসনের পরিবর্তে শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা স্বৈরাচার পতনের জন্য ৯ বছর আন্দোলন করেছি, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলাম, যে আবেগ নিয়ে আমরা তথাকথিত ১/১১ এর সরকারকে হটিয়ে একটা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম সেই স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ একটাই, সেটা হলো জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। জনগণ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করবে যেন সেই সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। সেরকম একটি সরকার কায়েমের লক্ষ্যে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারি তাহলেই আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘যে সরকার প্রকৃতপক্ষে জনগণের ভোটে নির্বাচিতই না, যে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা ব্যাংক লুট বন্ধ করতে পারেনি, শেয়ার মার্কেট লুট বন্ধ করতে পারেনি, এমনকি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক ওটা পর্যন্ত লুট হয়ে গেছে, যে সরকারের আমলে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে এবং সেই টাকা সুইচ ব্যাংকে যাচ্ছে, সেকেন্ড হোম হচ্ছে, বেগমপাড়া হচ্ছে, সরকার দলের লোকজনের আলমারি খুললে কোটি কোটি টাকা, সিন্দুক খুললে কোটি কোটি টাকা, বাক্স খুললে কোটি কোটি টাকা, যাদের খাটের নিচে ত্রাণের সামগ্রী- এমন সরকারকে জনগণ বয়কট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমাদেরকে আমাদের আধিকার আদায়ে লড়াই করতে হবে। আর সেই লড়াই হবে গণতান্ত্রিক লড়াই, জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াই। আর সে লড়াইয়ের নেতৃত্ব অতীতে যেমন দিয়েছে বিএনপি, বিএনপির নেতা শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়া ঠিক, এবারও বিএনপিই দিবে, বেগম খালেদা জিয়াই দিবেন।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।