নুসরাত হত্যা: হাইকোর্টে জামিন হয়নি ওসি মোয়াজ্জেমের
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান ওরফে রাফির বক্তব্যের ভিডিও প্রচারের ঘটনায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন হয়নি।
সাইবার ট্রাইব্যুনালে থাকা মামলাটি ৪০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই সময়ের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি না হলে মোয়াজ্জেমের জামিনের আবেদন বিবেচনা করতে বলেছেন আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন।
বিচারিক আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চেয়েছিলেন মোয়াজ্জেম। এই আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট আদেশ দেন।
আদালতে মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানউল্লাহ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রানা কাওসার ও শাহীন হাওলাদার। মূল মামলার বাদী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হকও শুনানিতে অংশ নেন।
গত ১৮ অক্টোবর শুনানি শেষে আদালত ৩ নভেম্বর আদেশের জন্য দিন রেখেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ আদেশ দেয়া হয়।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী রানা কাওসার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সরওয়ার হোসেন বাপ্পী। মূল মামলার বাদী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত ১৭ জুলাই সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এর বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান তিনি। এরপর ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট ওসি মোয়াজ্জেমের করা আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে ১৩ অক্টোবর শুনানির জন্য রাখে। সে ধারাবাহিকতায় বুধবার এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। ৯ জুলাই ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
নুসরাত গত মার্চ মাসে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করলে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন। তার কয়েক দিনের মাথায় মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওসির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সারাদেশে আলোচনার মধ্যে নুসরাতের সেই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী সৈযয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ১৬ জুন গোপনে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম। আদালত পরদিন আবেদনটি শুনানির জন্য রাখলেও ওই দিনই সুপ্রিমকোর্ট এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।