যোগী আমলে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা ব্যাপক বেড়েছে উত্তরপ্রদেশে

0

তিন বছর আগেই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সত্যি কথাটা কবুল করে ফেলেছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী সুরেশকুমার খন্না, ‘যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রথম দু’মাসে রাজ্যে ৮০৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে!’ সেটা ২০১৭ সালের জুলাই। যোগী সরকারের বয়স তখন মাত্রই চার মাস।

ভারতের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’র (এনসিআরবি) তথ্য বলছে, পরবর্তী বছরগুলোতে দেশের বৃহত্তম রাজ্যে (জনসংখ্যার নিরিখে) ধর্ষণসহ যৌন হেনস্থার ঘটনার হার বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সাধারণ দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন শাসকদলের নেতা, বিধায়ক মায় অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও!

গত আগস্টে প্রকাশিত এনসিআরবি রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ৫৯ হাজার ৮৫৩, যা দেশটির মধ্যে সর্বাধিক। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ৬৫টি। অর্থাৎ গড়ে দৈনিক প্রায় ১১ জন নারী ধর্ষিতা হন ওই রাজ্যে। রিপোর্ট বলছে, এদের মধ্যে ৩৪ জনকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে।

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ধর্ষণের প্রকৃত স‌ংখ্যা অনেক বেশি। বহু ক্ষেত্রেই রাজ্য পুলিশের ‘কৃতিত্বে’ আড়ালে থেকে যায় ধর্ষণের ঘটনা। বহু ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা অর্থের ‘সৌজন্যে’ ধর্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করেই দায় সারে যোগীর পুলিশ। ধর্ষিতা ‘নিচু জাতি’ কিংবা গরিব পরিবারের হলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার সাহসও হয় না। সংবাদমাধ্যমের নজর না পড়লে থানার বাইরে ‘মিটমাট’ও হয়ে যায়! এমনকি, ধর্ষণের পরে খুনের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলেও দেখানো হয়! যেমন এক আইনের ছাত্রীর দায়ের করা ধর্ষণের মামলার প্রেক্ষিতে গত বছর পুলিশ সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি নেতা স্বামী চিন্ময়ানন্দকে গ্রেফতার করলেও তার বিরুদ্ধে মামুলি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এনসিআরবি’র রিপোর্ট আরো জানাচ্ছে, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মোট সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৬ হাজার ১১ এবং ৫৯ হাজার ৪৪৫টি। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সে বছর রাজ্যে ৪ হাজার ৬৬৯টি ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম উন্নাও গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড। যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন বিজেপি’র বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার। ২০১৮ সালে ধর্ষণের সংখ্যা সামান্য কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩২২টি। এর মধ্যেও ৪১টি ক্ষেত্রে ধর্ষিতাকে খুন করা হয়েছিল।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com