বাস্তবতা বিচার করে অগ্রসর হতে হবে: আলাল
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বাস্তবতার নিরিখে বিচার-বিশ্লেষণ করে অগ্রসর হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেন, ‘এমন কোনও যুদ্ধে যাওয়া যাবে না, যে যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় জেনেই আত্মাহুতি দিতে হবে। বরং অনেক যুদ্ধ আছে, যে যুদ্ধে পরাজয় বরণ করলেও ইতিহাস সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করে।’
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের উদ্যোগে ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইসহাক সরকারের মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘রাজনীতিতে যে পরিবর্তনটা দরকার, ধাপে ধাপে সবকিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশের পরিস্থিতির সঙ্গে গণতন্ত্রের বিকাশ ও ধ্বংস এ দুটোকে গভীর পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করে, একটার সঙ্গে তাল মেলানো আরেকটাকে প্রতিহত করা- এই দায়িত্বটা আমরা ঠিকমত পালন করতে পেরেছি কিনা সেটাও ভেবে দেখা দরকার। তা না হলে আমি কেন আপনাদের রাগকে পুঁজি করে রাজপথে নামতে বলবো। আপনাদের বাবা-মাকে আমরা কী জবাব দেবো? আপনার পরিবারের কাছে কী জবাব দেবো? তার প্রমাণ তো বেগম খালেদা জিয়া, কিছুই করতে পারিনি আমরা। আবেগ সবসময় প্রাধান্য দিলে চলবে না। বাস্তবতার নিরিখে বিচার করে তারপরে অগ্রসর হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পলাশীর প্রান্তরে লর্ড ক্লাইভ ও মীরজাফরের কাছে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু শত শত বছর পরেও কোনও মা কি তার সন্তানের নাম মীরজাফর রাখেন? বরং অনেক সন্তানের নাম নবাব সিরাজউদ্দৌলার নামে রাখা হয়। অর্থাৎ পরাজিত লোকেরাই সম্মান বেশি পেয়ে থাকেন। পরাজিত লোকেরা ইতিহাসেও স্থান পেয়ে থাকে। মীরজাফরের মতো বিজয়ীরা কখনও ইতিহাসে স্থান পায় না। আজকের ‘সরকার’ হচ্ছে ওই ধরনের বিজয়ী। অর্থাৎ ইতিহাসে তাদের কোথায় স্থান হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তা দেখবে।’
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হচ্ছে আমরা কী করছি? বিশ্বের রাজনীতির পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। আগের মতো রাজপথে মিছিল করে কিছু হয় না। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের জোয়ার উঠেছিল না? হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল করেছে না? নির্বাচনের দিন কোথায় গেল নেতারা? সবাই কোথায় গেলো? ভোটের দিন ওই পরিমাণ নেতাকর্মী হলো না কেন? এটাকে বিশ্লেষণ করে তারপরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবেগকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরও বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে যাক, বেগম খালেদা জিয়ার মতো পরিণতি হোক, সেটা কখনও কারও কাম্য নয়। আমাদের অনেককিছু বিশ্লেষণ করা দরকার।’
সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ,যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।