ভূমিহীনদের টাকা আত্মসাত করলো আ.লীগ নেতা

0

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভূমিহীনদের খাসজমি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন সরকারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে, চন্দন সরকার ওই ওয়ার্ডের কান্ঠালিয়া গ্রামের সাধন মনি দাসের ছেলে সুধীর মনি দাসের কাছ থেকে ২০ হাজার, অরুন মন্ডলের ছেলে বিপেন মন্ডলের কাছ থেকে ২০ হাজার, খগেন্দ্র মনি দাসের ছেলে বাসুদেব মনি দাসের কাছ থেকে ১৫ হাজার ও নেপাল মনি দাসের ছেলে খোকন মনি দাসের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। খাসজমি পাওয়ার আশায় দুস্থ ভূমিহীন পরিবারগুলো সুদে টাকা ধার করে এনে এক বছর আগে চন্দন সরকারকে দেন। কিন্তু বছর পার হলেও ওইসব পরিবারগুলোকে জমি পাইয়ে দেননি তিনি।

এদিকে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পরিবারগুলো। জমির কথা বলতে গেলেই চন্দন সরকার তাদের ধৈর্য ধরতে বলেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, চন্দন সরকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদানের কথা বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সরকারি খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি নিজেই পৌরসভা থেকে তাদের নামে ভূমিহীন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছেন। তিনিই আবার উপজেলা ভূমি অফিস থেকে খাসজমি পাওয়ার আবেদন ফরম সংগ্রহের পর তা পূরণ করে উপজেলা ভূমি অফিসে জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার (৩১ আগস্ট) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে গিয়ে তাদের নামে কোনো আবেদনই খুঁজে পাননি।

কান্ঠালিয়া গ্রামের সুধীর মনি দাস জানান, চন্দন সরকার আমাকে জানান সরকার ভূমিহীনদের জন্য জমি দেবে। এজন্য ২০ হাজার টাকা লাগবে। এ কথা শুনে স্থানীয় এক মহাজনের কাছ থেকে সুদের ওপর ২০ হাজার টাকা এনে চন্দনকে দিই। এক বছর পার হলেও জমি পাচ্ছি না। টাকা ফেরতের কথা বললে আমাকে গত দুর্গাপুজায় তিন হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। বাকি টাকা চাইলে টালবাহানা করছে। সুদে টাকা এনে দিয়েছি। সুদের টাকা নিয়ে বিপাকে আছি।

একই এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক বাসুদেব মনি দাস বলেন, সরকারি জমি আছে। তোমরা সবাই জমি পাবা। জমির জন্য টাকা জমা দিতে হবে। এসব কথা চন্দন আমাকে জানান। পরে জমি পাওয়ার আশায় চন্দনকে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এক বছর পার হলেও তিনি আমাকে জমিও দেন না, টাকাও ফেরত দেন না।

তবে এসব বিষয়ে মির্জাপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন সরকার বলেন, এলাকায় রাজনীতি করতে হলে মানুষের কিছু কাজ করতে হয়। সেজন্য আমি ভূমিহীন চারজনকে খাসজমি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে কিছু টাকা নিয়েছি। আবার একজনকে ১০ হাজার টাকা ফেরতও দিয়েছি।

মির্জাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। চন্দন সরকারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলের সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন এমপির সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জুবায়ের হোসেন জানান, ভূমিহীনদের কাছ থেকে তিনমাস অন্তর আবেদন নেয়া হয়। খাসজমি পেতে রেজিস্ট্রি ফিস ছাড়া কারো কোনো খরচ হয় না। ভূমিহীন সকলেই আবেদন করতে পারবেন। তবে যাচাই-বাছাই শেষে প্রকারভেদে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com