ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি একুশ হাজার কোটি টাকা

0

দেশের সরকারি-বেসরকারি ১০টি ব্যাংক প্রয়োজন অনুপাতে মূলধন সংরক্ষণ করতে পারছে না। ফলে এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির পর দীর্ঘদিন মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। আর সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বেশি সুদে তহবিল নিয়ে কম সুদে ঋণ দেয়ায় ঘাটতিতে। আবার বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাটতি দেখা দিয়েছে অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো গ্রাহক থেকে আমানত নিয়ে ঋণ দেয়। সেই ঋণ খারাপ হয়ে পড়লে সেই অনুপাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়। আবার খারাপ ঋণের ওপর অতিরিক্ত মূলধন রাখার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন শেষে সরকারি বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ১০ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। ওই সময়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, ‘কৃষি ব্যাংকের তহবিল খরচ শতকরা ৯ টাকা ৮০ পয়সা। আর ঋণ দিতে হয় ৯ শতাংশ সুদে। অর্থাৎ বিতরণ করা ঋণের একটি বড় অংশের আয় তহবিল খরচের চেয়ে কম। তবে ৪ শতাংশ সুদেও কিছু ঋণ দেয়া হয়। সেটা নগণ্য। এ কারণে এত বেশি মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর থেকে উত্তরণের পথ আছে, তবে সময় লাগবে। চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ৩ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ১৫৯ কোটি টাকা।

সরকারি বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ঘাটতি ১ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ১ হাজার ৬২২ কোটি টাকা।

সাবেক ফারমার্স বা বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি ২০ কোটি টাকা। যাত্রা শুরুর পর বিভিন্ন অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে ব্যাংকটি ঘাটতিতে রয়েছে। নতুন কার্যক্রম শুরু করা কমিউনিটি ব্যাংকের ঘাটতি ১৪ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির কোনো ঋণ খেলাপি হয়নি, তবে নিয়মানুযায়ী বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে কিছু নতুন মূলধন বাড়ানোর বাধ্যবাধকতা দেখা দিয়েছে। সে কারণে মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে পুলিশের এই ব্যাংক।

জানা যায়, গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে সার্বিক মূলধন ঘাটতি ১১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com