বিকল্প চিন্তায় বঞ্চিত হতে পারে বাংলাদেশ

0

ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে সহায়তা দেয় গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি)। গ্যাভির অর্থায়নকারী দেশ হিসেবে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। তবে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংগ্রহে বিকল্প উেসর কথাও ভাবছে সরকার। এটি হলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে গ্যাভির অগ্রাধিকারবঞ্চিত হতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাই জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা কর্তৃক তৈরীকৃত কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রথম পর্যায়ে প্রাধিকার ভিত্তিতে ও সুলভে পেতে চায় বাংলাদেশ। বিষয়টি আলোচনা করতে ভ্যাকসিন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।

বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভির মাধ্যমে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভৌগোলিক ও আর্থিক বিবেচনায় বাংলাদেশ যেন ভ্যাকসিন সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখা হচ্ছে। এরই মধ্যে গ্যাভির কাছে আগ্রহপত্র পাঠানো হয়েছে। গ্যাভিও ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য দেশের সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেপ্টেম্বরে গ্যাভির বোর্ড সভায় সদস্য দেশগুলোয় ভ্যাকসিন বিতরণ এবং মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গ্যাভির কো-ফিন্যান্সার হিসেবে ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্যতা আছে বাংলাদেশের। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে ভ্যাকসিনের ফান্ডিং বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও  মাথাপিছু আয় বিবেচনায় বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাভির ভ্যাকসিন পাবে কিনা, সে বিষয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এদিকে আইসিডিডিআর,বিও ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না। গ্যাভি, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও যুক্ত। গ্যাভি ছাড়াও সরাসরি নগদ তহবিলের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনার বিষয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, আইসিডিডিআর,বির কনসালট্যান্ট ডা. তাজুল ইসলাম এ বারী, সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. ফেরদৌসি কাদরি ও সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. কে জামান প্রমুখ অংশ নেন।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে নিয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে। কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির পাশাপাশি নগদ টাকায় ভ্যাকসিন ক্রয় বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আইসিডিডিআর,বির কনসালট্যান্ট ডা. তাজুল ইসলাম এ বারী বলেন, ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না। উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সম্মুখে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে। আইসিডিডিআর,বি গ্যাভির সহায়তায় অন্যান্য ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে। তবে গ্যাভির বাইরে বিকল্প চিন্তা করলে বাংলাদেশ গ্যাভির অগ্রাধিকার দেশের তালিকা থেকে বাদও পড়তে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমতির বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হতে হবে। ট্রায়ালের অনুমোদন সর্বোচ্চ মহল থেকে আসতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার নেই।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, ভ্যাকসিন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা একটা মিটিং করব কোম্পানিগুলোর সঙ্গে। আন্তর্জাতিকভাবেও যেখানে যেখানে যোগাযোগ করা দরকার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা সব করছি। আজকে কেবিনেটেও মিটিং করেছি। আমরা ট্র্যাকে থাকতে চাচ্ছি, টেস্টটাও যেন বাংলাদেশে হয়, আমরা সে ব্যবস্থাও করছি। আশা করছি সামনে হালনাগাদ তথ্য পাবেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com