দেশে করোনায় কাজ হারিয়েছে ১৭ লাখেরও বেশি তরুণ

0

বৈশ্বিক মহামারি করোনার শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রায় ১৮ লাখ তরুণ চাকরি হারিয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থা দু’টির এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের উপর করোনার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে।

মঙ্গলবার ‘ট্যাকলিং দ্য কোভিড-১৯ ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ক্রাইসিস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনে করোনাকালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৩টি দেশের তরুণদের চাকরি হারানোর এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা প্রতিরোধে আরোপিত লকডাউনের কারণে বাংলাদেশে স্বল্প মেয়াদে চাকরি হারিয়েছে ১১ লাখ ১৭ হাজার তরুণ। যা দীর্ঘ মেয়াদে বেড়ে ১৭ লাখ ৭৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছে ভারতের তরুণ জনগোষ্ঠী। দেশটির ৬১ লাখ ১৩ হাজার তরুণ এ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আর পাকিস্তানে করোনায় চাকরি হারিয়েছে ২২ লাখ ৫৮ হাজার তরুণ।

ইন্দোনেশিয়ায় চাকরি হারানোর সংখ্যা ১৮ লাখ ৮১ হাজার, ফিলিপাইনে ১০ লাখ ১৯ হাজার, থাইল্যান্ডে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ও ভিয়েতনামে পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার, কম্বোডিয়ায় দুই লাখ ৫৫ হাজার, নেপালে এক লাখ ৮৬ হাজার ও শ্রীলংকায় এক লাখ ৫১ হাজার তরুণ চাকরি হারিয়েছে বা এ প্রক্রিয়ায় আছে।

করোনার কারণে এসব অঞ্চলে বেকারত্ব দ্রুত বাড়ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বছর শেষে ১৩টি দেশে এ হারে বড় ধরনের উলম্ফন হতে পারে। কোনো কোনো দেশে এ হার দ্বিগুণ আকার ধারণ করবে। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। ২০১৯ সালে দেশে তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ছিল ১১.৯ শতাংশ। যেখানে চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ২৪.৮ শতাংশ।

প্রতিবেশী ভারতে ২০১৯ সালে তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ছিল ২৩.৩ শতাংশ। তা বেড়ে দাঁড়াবে ৩২.৫ শতাংশ। পাকিস্তানে ২০১৯ সালে তরুণ বেকারত্বের হার ছিল ৮.৯ শতাংশ। চলতি বছর তা হবে ২১.৫ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলংকায় তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ২১.১ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৭.৮ শতাংশ।

মহামারিকালে মূলত কৃষি, খুচরা বাণিজ্য, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, অভ্যন্তরীণ পরিবহন সেবা, নির্মাণ খাত, টেক্সটাইল খাত এবং অন্যান্য সেবা- এসব খাতে চাকরি হারিয়েছেন তরুণরা। বাংলাদেশের তরুণরা এই সাত খাতে চাকরি হারিয়েছে, যথাক্রমে ২২.৯ শতাংশ, ১২.১ শতাংশ, ২.৬ শতাংশ, ৭.৪ শতাংশ, ১২.৮ শতাংশ, ১৩.৬ শতাংশ ও ৪.৫ শতাংশ।

আইএলও ও এডিবি চলমান বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারিভাবে ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, বেসরকারি খাতে শ্রমিক নিয়োগে ভর্তুকি প্রদানে সমন্বিত নীতি প্রণয়ন এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ।

এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো গেলে করোনার আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া এবং এ অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন সহজ হবে বলে মনে করছে আইএলও ও এডিবি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com