ক্ষমতাসীনরা জিয়াউর রহমানকে খাটো করার অপচেষ্টা করছে

0

ক্ষমতাসীনরা মিথ্যাচার করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খাটো করার অপচেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখবেন, এই দেশের স্বাধীনতা যিনি ঘোষণা দিলেন এবং যুদ্ধ করলেন, একইসঙ্গে যিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসার পরে ক্রীড়াঙ্গনকে উদ্দীপ্ত করলেন, দেশকে জাগিয়ে তুললেন— মিথ্যা সব কথা বলে তাকে খাটো করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।’

(১৬ আগস্ট) দুপুরে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ‘আরাফাত রহমান কোকো ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন মির্জা ফখরুল।

আওয়ামী লীগের ক্যামেস্ট্রিটা হচ্ছে দলীয়করণের ক্যামেস্ট্রি বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ওখানে আপনার নিরপেক্ষতা অথবা দলের বাইরে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা— এটা তাদের মধ্যে নেই। আজকে গোটা রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে তারা। এটা তাদের আদর্শগত, নীতিগত বলবো। কারণ, ১৯৭৫ সালে তারা একদলীয় শাসন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। আমরা তো সেগুলো ভুলে যাইনি। আজকে যদিও সবকিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এত সহজে সত্যকে তো ঢেকে দেওয়া যায় না।’

আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি বলে উল্লেখ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সময়ে খেলাধুলা, গান-বাজনা আর রাজনীতি বলুন— কোনোটাই দলীয়করণের বাইরে নয়। আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করার চেতনা, গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের চেতনায়। সেই চেতনাকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’

তিনি বলেন, ‘যারা আজকে জোর করে শাসন করছেন, তারা সেই চেতনাকে বিনষ্ট করে দিয়ে একদলীয় ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এখানে খেলাধুলা আলাদা ব্যাপার নয়, ক্রীড়াঙ্গন আলাদা ব্যাপার নয়। পুরো রাষ্ট্রটাই এখন একটা দলের মধ্যে, চিন্তার মধ্যে চলে গেলো।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমেরিকান অ্যাম্বেসিতে এক অনুষ্ঠানে আমাদের প্রতিথযশা শিল্পী, যিনি লালনগীতিকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছেন— সেই কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তার স্বামী হাকিম সাহেবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তারা খুব দূঃখ করে বললেন— এখন আর সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে অথবা সরকারের স্পন্সার যেসব টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আছে, তারা তাদেরকে আর ডাকে না। কী নিদারুন অবস্থা চিন্তা করেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ঠিক একইভাবে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, কিন্তু তাদের (আওয়ামী লীগ) সমর্থক ছিলেন না, তারা মারা যাওয়ার পরে তাদের মরদেহ শহীদ মিনারে পর্যন্ত নিতে দেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষ গণতান্ত্রিক ও বহু চিন্তার রাষ্ট্র আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখানে কে বিএনপি, কে আওয়ামী লীগ, কে সিপিবি করে বা অন্যান্য দল করে ওটা বেশি ব্যাপার নয়। ব্যাপারটা হচ্ছে এই রাষ্ট্রকে সবার কথা, মতের চিন্তার স্বাধীনতা এবং জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে করবো। তাহলেই সবকিছুরই উন্নয়ন হবে।’

ক্রিকেটসহ বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নে আরাফাত রহমান কোকোর অবদানের কথা স্মরণ করেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোকো রাজনীতির বাইরে থেকে পুরোপুরিভাবে খেলাকে খেলা হিসেবে দেখে  সংগঠনের কাজে সময় ব্যয় করেছেন ও অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে করেছেন। আজকে আমাদের ক্রিকেটে যে ভিত্তি দেখতে পাই— এটা তৈরি করেছিলেন কোকো।’

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের  সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হকের পরিচালনায় সভায় জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা, ক্রিকের্ট বোর্ডের সাবেক সহসভাপতি শাহ নুরুল কবির শাহিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু, জেলা বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের মহাসচিব কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল, ক্রীড়া সংগঠক তাবিথ আউয়াল ও প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com