আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার নীরব কারিগর ‘খালেদা জিয়া’

0

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (Bangladesh Nationalist Party – BNP) বিএনপির প্রধান,।

খালেদা জিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট জলপাইগুড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন,। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সাল এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত দু দফায় মোট ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন,। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী,।

আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার নীরব কারিগর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০০১ সালে বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের শিল্পখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী, উদার ও বিনিয়োগ বান্ধব নীতি ও কৌশল গৃহীত হয়েছিলো,। যার ফলে দেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো এবং শিল্পায়ন ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছিলো,। বিনিয়োগ ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে আকর্ষণীয় ও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের সৃষ্টি হয়েছিলো,।

২০০১-২০০২ অর্থবছরে যে প্রবৃদ্ধি ছিলো ৪.৪২% তা পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকারের শাসন আমলের ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে ৫.২৬% এবং ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.২৭% উন্নীত হয়েছিলো কিন্তু পরবর্তীতে বন্যা ও অতিবর্ষণের কারণে কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও শিল্প ও সেবাখাতে প্রবৃদ্ধির কারণে ২০০৩-২০০৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৩৮% অর্জন করা সম্ভব হয়েছিলো,। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে মাথাপিছু জিডিপি ও জাতীয় আয় ছিলো যথাক্রমে ৪৪৫ ও ৪৭০ মার্কিন ডলার,।

১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার ৮৮ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো,। ১৯৯৫ সালে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো ৩৪৫ কোটি মার্কিন ডলার,। বিএনপি সরকার ক্ষমতা ত্যাগের সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের কিছু বেশি রেখে গিয়েছিলো,। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ২০০১ সালে ক্ষমতা ত্যাগ করার সময়ে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেখে যায়,। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছিলো যা পরবর্তীতে ২০০৬ সালের মে মাস পর্যন্ত ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছিলো,। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক্সচেঞ্জ হাউজ প্রতিষ্ঠা সহ “মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২” প্রবর্তন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স সেল স্থাপন, রেমিট্যান্স পাঠানোর সময় এবং খরচ কমিয়ে আনায় ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ পূর্ব্বর্তী অর্থবছরগুলোকে ছাড়িয়ে বেড়ে ৩৩৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছিলো,। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিলো প্রায় ৩৫১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো ৪৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে,। ২০০১-২০০২ অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিলো নেতিবাচক,। নেতিবাচক অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিলো ৯.৪% যা পরবর্তীতে ২০০৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বেড়ে ১২.৫% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিলো,। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে শিল্পখাতে সর্বাধিক ৮.৬০% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিলো এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ফলে জিডিপির ১৮.৫৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিলো,। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে প্রকৃত বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছিলো ৬৬০.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার,। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় বেড়েছিলো প্রায় ১.০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার,। দারিদ্রতা নিরসনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে মোট সম্পদের ৪২% (জিডিপির প্রায় ৬%), ২০০৩-২০০৫ অর্থবছরে মোট সম্পদের ৫১% (জিডিপির প্রায় ৮%), ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে ৫৪% (জিডিপির ৯.৪%) প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দারিদ্রতা নিরসন কার্যক্রম সমূহের জন্য বরাদ্দ করণ হয়েছিলো,।

মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্রতা বিমোচন এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন অর্জনে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে পর্যাপ্ত সম্পদ সঞ্চালনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকারের অবদান অনস্বীকার্য,। কেবলমাত্র বিনিয়োগ বোর্ডের নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহে প্রায় ১৪ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছিলো,। সুপেয় পানির প্রাপ্পতা নিশ্চিতকরণসহ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা হয়েছিলো,। দেশের ৯৭% শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করা হয়েছিলো,। প্রাথমিক শিক্ষার এ হার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ,। ২০০৩ ও ২০০৪ সাল অনুযায়ী মানব উন্নয়ন সূচকের নিরিখে পর পর দুইবার বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে স্থান করে নিয়েছিলো,।

কিন্তু আজ দেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নেই বলে দেশে অনিয়ম দূর্নীতি লুটপাট অপশাসন চলছে,। এই অবক্ষয় থেকে বেরিয়ে একটি আত্মমর্যাদাশীল সমৃদ্ধ স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে,। জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই, সকলের কৃতকর্মের বিচার শুরু হবে,। “জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্ব ছাড়া দেশ ও জনগণের উন্নতি হতে পারে না,৷ দেশের সামগ্রিক সংকট উত্তরণে এ সরকারের পতন তরান্বিত করার লক্ষে সকল জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে,।

কারণ ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে মৃত্যুই শ্রেয়,। গণতন্ত্র কারো দয়ার দান নয়,। গণতন্ত্র জনগণের অধিকার, আন্দোলন করেই এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে,। এদেশ এবং দেশের মানুষের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে,। এবং সে সময় পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে,।

জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে আমি ডালিয়া লাকুরিয়া চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, রাতের ভোটে নির্বাচিত অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার মসনদ যেকোনো মূহুর্তে পুতুল নাচের নাট্যশালার রঙ্গমঞ্চ গণবিস্ফোরণে তাসের ঘরের মতো ভেঙে খান খান হয়ে যাবে,। এই গণবিস্ফোরণে জনগণের অধিকার আদায়ের বিজয় হবেই হবে, যেমনটা হয়েছিলো অতীতে হবে আগামীতেও ইনশাআল্লাহ,।

-ডালিয়া লাকুরিয়া

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com