দুই সিটির ২৫ ওয়ার্ড ডেঙ্গুঝুঁকিতে

0

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুঝুঁকিতে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে তিন ওয়ার্ডের ১৫টি এলাকা। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর, পাইকপাড়া ও মধ্য পাইকপাড়া, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খিলক্ষেত, কুড়িল, কুড়াতলী, জোয়ারসাহারা, অলিপাড়া (আংশিক), জগন্নাথপুর, নিকুঞ্জ-১ ও ২ ও টানপাড়া এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের মীর হাজারীবাগ, দোলাইরপাড় ও গেণ্ডারিয়া।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কীটতত্ত্ববিদদের মতে, এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুর ঝুঁকির বিষয়টি। লার্ভার হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্স বা সূচকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি একশ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। সে হিসাবে উত্তরের ১১ নম্বর  ওয়ার্ডের তিনটি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৩ পাওয়া গেছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নয়টি এলাকা ও দক্ষিণের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ পাওয়া গেছে।

গত ১৯ থেকে ২৮ জুলাই দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এই বর্ষা মৌসুমের জরিপ চালানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় অধিদপ্তর জরিপের ফল প্রকাশ করে।

সেখানে বলা হয়, উত্তর সিটি করপোরেশনের নয়টি ও দক্ষিণের ১৬ ওয়ার্ড এখনো ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের ১০, ১১, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৪, ২৯, ৩২ ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণের ২, ৪, ৮, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ২৫, ৩৪, ৪০, ৪১, ৪৫ এবং ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে এডিস মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে জরিপে।

ডিএনসিসির ২৯ এবং ডিএসসিসির ৩৮টি ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ১০-এর বেশি। দুই সিটির পাঁচটি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি।

জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) জুয়েনা আজিজ। সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।

দুই সিটি করপোরেশনের ১০০টি এলাকায় ২ হাজার ৯৯৯টি বাড়িতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের ভেক্টরের ওপর এ জরিপ করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, এসব এলাকায় সেসব স্থানে সবচেয়ে বেশি লার্ভা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ পানিপূর্ণ পাত্র, ১২ দশমিক ১৭ প্লাস্টিক ড্রাম, ৯ শতাংশ প্লাস্টিক বালতি, ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ ব্যবহৃত পরিত্যক্ত টায়ার, ৮ দশমিক ২৭ শতাংশ ফুলের টব ও ট্রে, ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ পানির ট্যাংক, ৫ দশমিক ১১ শতাংশ মাটির পাত্র, ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্লাস্টিক বোতল ও ২ দশমিক ৯২ শতাংশ প্লাস্টিক মগ।

যেসব স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে, এর মধ্যে বহুতল ভবনে ৫১.৩৪ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবনে ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ, বস্তি এলাকায় ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, একক ভবন ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং পরিত্যক্ত জমিতে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

জরিপে বলা হয়, গত তিন বছরে (২০১৮, ’১৯ ও ’২০) জরিপে ডেঙ্গুজ¦রের প্রধান বাহক এডিস এজিপটাই এবং এডিস এলবোপিকটাস মশার গড় অনুপাত যথাক্রমে ৯৭ ও ৩ শতাংশ পাওয়া গেছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com