মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ছাড়াই চলে গেলেন সেই মুক্তুমিয়া
পঞ্চগড় উপজেলা সদরের অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় এলাকার সেই মুক্তুমিয়া (৯১) বুধবার সকালে মারা গেছেন। সন্ধ্যায় স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। জীবনের শেষ বেলায় ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে সংসারের ঘানি টেনেছেন। জাতীয় পতাকায় ঢেকে সম্মান পাওয়ার শেষ স্বপ্নটুকুও তার পূরণ হলো না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুক্তুমিয়ার পরিবার।
মুক্তুমিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ৬নং সেক্টরের ৩/এ মধুপাড়া কোম্পানি কমান্ডার একেএম মাহবুব উল আলমের নেতৃত্বে অমরখানা, ভিতরগড়সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যুদ্ধ করেন মুক্তুমিয়া। টানা নয় মাস রেকি করা, গাইড, সংবাদ সরবরাহ কিংবা পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প আক্রমণ- সব কিছুতেই মুক্তুমিয়া অংশগ্রহণ করেন বীরত্বের সঙ্গে। একেএম মাহবুব উল আলমের গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধ বইটির একটি অংশে মুক্তুমিয়াকে শিরোনামে স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। সেখানে তার বীরত্বের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হলেও জীবন সংগ্রামে হেরে যান মুক্তুমিয়া। দারিদ্র্য আর সংসারের টানাপোড়েনে শেষ বয়সে ভিক্ষার থলি হাতে নিতে হয় তাকে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা বাছাই বোর্ডে তার নাম সর্বসম্মতিক্রমে তালিকাভুক্ত হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে নামটি এখনও গেজেটভুক্ত হয়নি।
মুক্তুমিয়ার স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আমরা সব জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেছি। সবাই হবে হবে বলেছেন। তবে আজও স্বীকৃতি পাওয়া হলো না। তার শেষ ইচ্ছাটাও পূরণ হলো না।
অমরখানা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া বলেন, তিনি গেজেটভুক্ত না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা না হওয়ায় মুক্তুমিয়াকে গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই।