সরকারের টাকায় কেনা ত্রাণ লুটপাটে ব্যস্ত সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা: রিজভী
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা যেভাবে সারাদেশের মানুষের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দিয়েছে একইভাবে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছে। অন্যদিকে আজকে যখন দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে মধ্যাঞ্চল বন্যায় তলিয়ে গেছে লাখ লাখ মানুষের ঘর-বাড়ি, গবাদি পশু, ফসল ডুবে গেছে, তারা অসহায় অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছে তখন তাদের পাশে সরকারের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা লুটপাটে ব্যস্ত। বরং বিএনপি নেতাকর্মীরাই করোনা মহামারির মতো বন্যার সময়ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার দুপুরে ত্রাণ বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় বিএনপি’র উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের পকেটের টাকা দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্যসামগ্রী, নগদ অর্থ, পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে সারাদেশের মানুষের কাছে ছুটে বেড়িয়েছেন তারা। আর অন্যদিকে সরকারের টাকায় কেনা ত্রাণ লুটপাটে ব্যস্ত ছিল সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। কারো ঘরের মেঝে, খাটের নিচে, গোডাউন থেকে হাজার হাজার টন খাদ্যসামগ্রী, তেল পাওয়া গেছে। এমনকি ঈদের সময় গরিব মানুষের জন্য যে আর্থিক অনুদান দেয়ার কথা ছিল তাও লুট করেছে তারা। এজন্যই বিএনপি নেতাকর্মীরা সরকারের চক্ষুশূল হয়েছে। নিজেরা মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি, বিএনপি কেন দাঁড়িয়েছে- এজন্য তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার কারা হয়েছে। করোনার মধ্যেও গুম করা হয়েছে একাধিক নেতাকর্মীকে। বাদ যায়নি বিএনপি’র নারী সমর্থক-নেত্রীও।
রিজভী বলেন, আজকে যখন সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এসব মানুষের জন্যও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেই। তারা বরং লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। আর কীভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া যায়, গ্রেফতার করে জেলে রাখা যায়, গুম করা যায় সেটিতেই ব্যস্ত। কঠিন এই রোগের সময়ও বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, গুম করা হয়েছে।
করোনার সময় হাসপাতালগুলো নরকে পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, একদিকে সরকার করোনা চিকিৎসার কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। যার ফলে রোগীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে গাড়িতে, এম্বুলেন্সে, ভ্যানে মৃত্যুবরণ করেছে। আইসিইউ, ভ্যান্টিলেটর, অক্সিজেনের জন্য হাহাকার করেছে করোনা আক্রান্ত রোগীরা। আবার যেসব হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য সরকার দায়িত্ব দিয়েছে তারা এই মহামারিকে লুটপাটের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। করোনার মিথ্যা, জাল রিপোর্ট দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। আর এসব করেছে সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা রিজেন্ট-জেকেজির সাহেদ-সাবরিনারা।
নির্বাচিত সরকার না থাকায় জনগণের কাছে সরকারের কোনো দায় নেই মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে করোনা, বন্যায় জনগণের পাশে সরকার দাঁড়াচ্ছে না কারণ তারা রাতের অন্ধকারের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। এজন্য জনগণের কাছে তাদের কোন দায় নেই। জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। যদি সত্যিকারের কোনো গণতান্ত্রিক, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকতো তাহলে দেশে এই দুর্যোগকালে দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতিতে ব্যস্ত থাকতো না। কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটতো না। বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে করোনা সঙ্কটকালে যেভাবে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মানুষের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন, এখনো যাচ্ছেন একইভাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান রিজভী।