পাপুলের দুর্নীতি তদন্ত: কেঁচো খুঁড়তে সাপ খুঁজে পেল কুয়েত!
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপলুর বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে আরও অপরাধ কর্মকাণ্ডের সন্ধান পেয়েছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম আল কাবাস টুডে জানায়, কুয়েতি কর্মকর্তাদের অনিয়মের সুযোগে পাকিস্তান থেকে পাঁচ হাজার মানুষ দেশটিতে প্রবেশ করেছে।
দুই বছর আগে এই ঘটনা ঘটলেও পাপলুর দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়টি বের হয়ে আসে।
জানা যায়, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ফ্যামিলি ও ভিজিট ভিসা নিয়ে এসব পাকিস্তানি কুয়েতে প্রবেশ করে।
২০১১ সাল থেকে পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং ইরাকের নাগরিকদের জন্য ভিসা পেতে কড়াকড়ি আরোপ করে কুয়েত।
কিন্তু কুয়েতি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে পাকিস্তানিরা এসব ভিসা পায়। এর মাধ্যমে অনেক পাকিস্তানি প্রবাসী তাদের পরিবারকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে নিয়ে আসে।
ভ্রমণ ভিসায় এসব পাকিস্তানিকে কুয়েতে নিয়ে আসা হলেও পরবর্তীতে ফ্যামিলি ভিসাতে তাদের অবস্থান দেখানো হয়।
দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশন আরও দেখতে পায় যে, একইভাবে অন্তত এক হাজার ইরাকি নাগরিক কুয়েতে ঢুকেছে।
তারাও ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে কুয়েতি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে দেশটিতে আসে।
বিভিন্ন কোম্পানির কর্মী হিসেবে এসব দেশের নাগরিকদের কুয়েতে নিয়ে আসা হয়। তবে এর সঙ্গে পাপলুর প্রতিষ্ঠান জড়িত কী না সেটি এখনো স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে ৬ জুন সংসদ সদস্য পাপুলকে গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ। এরপর ২৪ জুন পর্যন্ত ২১ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি সংসদ সদস্য পাপলু বছরে প্রায় দুই মিলিয়ন দিনার আয় করেছেন বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে শ্রমিকদের নিয়ে আসার মাধ্যমে।
এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ ও উপহারও দিয়েছেন তিনি, সেই খরচ বাদ দিয়েই ওই পরিমাণ লাভ হয়েছে তার।
কুয়েতি কর্মকর্তাদের ঘুষ প্রদানের অভিযোগও স্বীকার করেন পাপলু। তার থেকে ঘুষ নেয়ায় অভিযুক্ত হয়েছেন দুই কুয়েতি এমপি। এ বিষয়ে কুয়েতের সরকারি তদন্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে।
কুয়েতে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শহিদ ইসলাম পাপলু। কুয়েতে তার ৫০ লাখ দিনারের সম্পদ রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত ব্যাংক আ্যকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।