স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাহজাহান সিরাজ’র মৃত্যুতে তারেক-ফখরুলের শোকবার্তা
সাবেক মন্ত্রী, বিএনপি’র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী ও দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ শাহজাহান সিরাজ গতকাল মঙ্গলবার, জুলাই ১৪, ২০২০, ৩:৩০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গণমাধ্যমে পাঠানো শোকবার্তায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শাহজাহান সিরাজ ছিলেন দেশের একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। স্বাধিকার, স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করেস্বাধীনতা উত্তর গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের আন্দোলনে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলায় তাঁর সাহসী ভূমিকা এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দেশবাসীর কাছে।কর্মীবান্ধব ও বিনম্র মানুষটি এই দু:সময়েএমন প্রস্থান এই ক্রান্তিকালে দেশে গভীর রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করলো। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশ ও গণতন্ত্র সুরক্ষার আন্দোলনে আপোষহীন নেতৃত্ব তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তিনি মাতৃভূমির প্রতি ঋণ পরিশোধ করে ছিলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শণই ছিল তাঁর রাজনৈতিক চেতনার ভিত্তি ও সকল কর্মকাণ্ডের উৎস। জন কল্যানের মহান ব্রত নিয়ে রাজনীতি করতেন বলেই তিনি এলাকাবাসীর নিকট ছিলেন আপনজন। জনপ্রতিনিধি ও মন্ত্রী হিসেবে সরকারের দায়িত্ব পালনের সময় দেশের টেকসই উন্নয়নে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণভূমিকা। অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবেও তিনি জাতীয় সংসদে ভূমিকা রেখেছিলেন জনগনের অধিকার রক্ষায়। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চেতনাকে দৃঢ়ভাবে বুকে ধারণ করে মানুষের বাক ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপি’র প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার অঙ্গীকারে শহীদ জিয়া প্রবর্তিত ধারাকে অক্ষুন্ন রাখতে তিনি ছিলেন অবিচল, এক্ষেত্রে তাঁর অবদান বাংলাদেশের মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশের এই দূর্দিনে তাঁর মতোএকজন অভিজ্ঞ ও আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদের পৃথিবী থেকে চিরবিদায়ে আমি গভীরভাবেশোকাহত হয়েছি।
আমি মরহুম শাহজাহান সিরাজ এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকার্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
অপর এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাবেক মন্ত্রী, দেশের খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ ও দেশমাতৃকার কৃতি সন্তান শাহজাহান সিরাজ এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করে বলেন,স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম কারিগর, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠকারী দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে আমি তাঁর পরিবারের শোক ও বেদনার সাথে সম-অংশিদার। আমাদের জাতীয় সংগ্রামের একজন কীর্তিমান পুরুষ শাহজাহান সিরাজ,দেশের মুক্তি, গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে এক সাহসী নেতার নাম শাহাজাহান সিরাজ। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন কেটেছে স্বৈরশাহীর জুলুম-নির্যাতনের কষাঘাতে। একদলীয় নাৎসী দু:শাসনের আগ্রাসী অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে তাঁকে বারবার কারা নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অগণতান্ত্রীক কর্তৃত্ববাদী অন্ধ অসহিষ্ণু সরকার তাকে হয়রানী করেছে বারবার। তবুও শাহজাহান সিরাজ গণঅধিকার আদায়ে তাঁর কর্তব্যকর্ম থেকে পিছপা হয়নি। তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল কিন্তু অন্যায় অপকর্মের প্রতিবাদে তেজশ্বী বাগ্মি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে তাঁর অংশগ্রহণ নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তাঁরমতো একজন অনন্য স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনীতিবিদ এই মুহুর্তে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ায় দেশ এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখিন হলো।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোকবার্তায় মরহুম শাহজাহান সিরাজ এর রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকবিহব্বল পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন এবং শুভাকাঙ্খীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।