শ্রীলঙ্কায় করোনায় মৃত মুসলিমদের লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার নিন্দা জমিয়তের

0

শ্রীলঙ্কায় করোনায় মৃত মুসলিম নাগরিকদের লাশ ইসলামী রীতিতে দাফন করতে না দিয়ে জোরপূর্বক পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে আমরা জানতে পারছি, শ্রীলঙ্কায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী মুসলিম নাগরিকদের লাশ ইসলামী বিধান মেনে দাফন করার পরিবর্তে জবরদস্তিমূলকভাবে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। দেশটির সরকার এ জন্য করোনাভাইরাস বিস্তার রোধের মনগড়া যুক্তি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে।

আল্লামা কাসেমী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থাসহ চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা বার বার স্পষ্ট করে বলেছেন যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর দেহে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাস সম্পূর্ণ নিষ্ক্রীয় হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী সকল দেশেই করোনায় মৃতদের লাশ নিজ নিজ ধর্মমতে দাফন বা দাহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইসলামধর্ম মতে যে কোনো মুসলমানের মুত্যুর পর তার লাশের গোসল, কাফন ও জানাযা আদায় শেষে মর্যাদাজনকভাবে দাফন করার বিধান রয়েছে। তাছাড়া প্রচলিত বিশ্ব ব্যবস্থায়ও যে কোন মানুষ মৃত্যুর পর স্ব স্ব ধর্মবিশ্বাস মতে শেষ আনুষ্ঠানিকতা পাওয়া তার মৌলিক অধিকার। কোন মৃতের ক্ষেত্রে এ ব্যতিক্রম ঘটলে তাতে মৃতের প্রাপ্য অধিকারই শুধু হরণ করা হয় না, বরং এটা মৃতের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং সর্বোপরি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের জন্যও গুরুতর মানসিক নিপীড়ন ও অমর্যাদার শামিল।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, শ্রীলঙ্কায় ২০১৯ সালের এপ্রিলে ষড়যন্ত্রমূলক বোমা হামলার পর থেকে দেশটির মুসলিম নাগরিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার ও দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে। বর্তমান গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মুসলিম বিদ্বেষী তৎপরতা বহুগুণ বেড়েছে। নানা ছলছুতা ধরে মুসলমানদের অনেক মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। করোনা মহামারিতে মৃত মুসলিমদের লাশ জবরদস্তিমূলক পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা তার শেষ উদাহরণ। তাছাড়া করোনা টেস্ট ও চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রেও দেশটির মুসলমানদের সাথে পশুর মতো আচরণের সরেজমিন প্রতিবেদন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এসেছে।

তিনি বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম শ্রীলঙ্কা সরকারের এমন মুসলিমবিদ্বেষী ঘৃণা চর্চা, জাতিগত নিপীড়ন এবং মানবাধিকারবিরোধী ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে। আমরা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ওআইসি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকারের সাম্প্রদায়িক ঘৃণাচর্চা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি সার্কভুক্ত ও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকারের সেদেশের মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারবিরোধী পদক্ষেপ ও জাতিগত নিপীড়নের কড়া প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানাই। বিজ্ঞপ্তি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com