বিএনপি করায় সংগীতজগৎ থেকে বিতাড়িত বেবী নাজনীন
গানের জগতে তাকে বলা হতো ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। সেই ব্ল্যাক ডায়মন্ড বাংলাদেশের সংগীতজগৎ থেকে বহুদিন দূরে। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে তাকে দেখা যায় না বাংলাদেশের কোনো মঞ্চে। বেবী নাজনীনকে শ্রোতারা এখনো তার গানের মতো করেই সারা বাংলায় খুঁজে বেড়ান, কিন্তু তিনি এখন কোথায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে পরিবার নিয়ে থাকেন বেবী নাজনীন। তবে এই মুহূর্তে একমাত্র ছেলে মহারাজ অমিতাভকে নিয়ে নিউইয়র্কের এস্টোরিয়াতে আছেন। শিল্পী জানান,, ‘করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর নিউ জার্সি থেকে নিউইয়র্কের বাসায় আসি। এরপর লকডাউন শুরু হয়। আর যাওয়া হয়নি। চার মাসের বেশি এখানেই আছি। মা-ছেলের সময় কেটে যাচ্ছে।’
করোনায় লকডাউনের কারণে বাসা থেকে বের হন না খুব একটা। জরুরি প্রয়োজনে বাজার–সদাই করতে মাঝেমধ্যে বের হতে হয় বলে জানালের বেবী নাজনীন। যে বাড়িতে থাকেন, তার আশপাশেও করোনায় আক্রান্ত রোগী নেই। তাই কিছুটা স্বস্তি। কীভাবে সময় কাটছে জানতে চাইলে বললেন, ‘বাসায় রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া আর ধর্ম-কর্ম করেই কেটে যাচ্ছে। সাধারণত বাড়িতে থাকলে যা করতে হয় আরকি।’
২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের কোনো স্টেজ শোতে দেখা যায়নি এই শিল্পীকে। দেশের মঞ্চে গাইতে না পারলেও ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন মঞ্চে গান গেয়ে চলছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কারণেই আমার গানের কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত বাধা এসেছে। তা ছাড়া আমাদের সময়ে যেভাবে কনসার্ট হতো, তা এখন আর নেই। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব অনুষ্ঠান হয়, তা–ও সুনির্দিষ্ট শিল্পীদের দিয়ে করানো হয়।’
বেবী নাজনীন বলেন, ‘রাজনীতি করাটাই আমার কাল হয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনীতি করাটা সবার স্বাধীনতা, আমিও তা–ই করেছি। অথচ এই রাজনীতি করার কারণে একের পর এক আমার কনসার্ট বাতিল হয়েছে। এমনকি টেলিভিশনের সরাসরি অনুষ্ঠান থেকেও অজ্ঞাত কারণে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রাজনীতির কারণে আমাকে কোণঠাসা করা হয়েছে। একজন জাতীয় শিল্পী হিসেবে আমি কিন্তু নানা সময়ে দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছি। গানের মাধ্যমে আমি আমার ইন্ডাস্ট্রিকে এনহেন্স করেছি। বিএনপির রাজনীতির কারণে অনেক বছর ধরে রাষ্ট্রীয়ভাবেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকা বন্ধ। কিছুই বলি না, মনে মনে কষ্ট পাওয়া ছাড়া কিছুই তো করার নেই।’