ফেঁসে যাচ্ছেন এমপি পাপুল’র সহযোগীরা
কুয়েতে মানব পাচার ও অবৈধ অর্থ পাচারের অভিযোগে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সহযোগীরা এবার ফেঁসে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই নেতাকে নিয়ে নতুন নতুন রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে কুয়েতে। তার স্টেটম্যান্টে কুয়েতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও সরগরম হয়ে উঠেছে।
আটকের পর থেকে রিমাণ্ডে থাকা কুয়েতের ইতিহাসে মানবপাচার বিষয়ক সর্ববৃহৎ এবং চাঞ্চল্যকর মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। রিমাণ্ডে তিনি নিজেকে বরাবরের মতো নির্দোষ দাবি করেছেন।
দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম আরব টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি এমপির মামলার তদন্তে আরো রহস্য এবং চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসছে। ঘুষ নিয়ে কুয়েত সরকারের যেসব কর্মকর্তা আইন বহির্ভূত কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন, তাদের মধ্যে তিনজনের নাম প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি এমপি পাপুল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই এমপি যে তিনজনের নাম প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে একজন কুয়েতের একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও একজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক কর্মকর্তা। অন্যজন সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
কয়েকদিন ধরে রিমাণ্ডে থাকা পাপুল রীতিমত বোমা ফাটিয়েছেন। তিনি এ দিনে কুয়েতের কোথায় কত ইনভেস্ট করেছেন? কাকে কত দিয়ে কিনেছেন? সবই বলেছেন তিনি। তবে দাবি করেছেন কাউকেই তিনি ঘুষ হিসাবে কোনো অর্থ দেননি। যা দিয়েছেন তা সবই গিফট! উপহার প্রাপ্তদের তালিকায় কুয়েতের বর্তমান দু’জন পার্লামেন্টারিয়ান এবং একজন সাবেক রয়েছেন। তারা দেশটির রাজনীতি ও প্রশাসনে বেশ প্রভাব রাখেন।
তবে পাপুলের দাবি- তিনি ব্যবসা করেছেন, পাচার নয়। আর তার এ ব্যবসায় বাংলাদেশ এবং কুয়েতের অনেককের হিস্যা আছে। তিনি কেবল তা আদায় করেছেন। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় তিনি শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ নেয়া দেশি-বিদেশি অনেকের নাম বলে দিয়েছেন।
পাপুলকে নিয়ে কুয়েতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও সরগরম হয়ে উঠেছে। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আনাস আল সালেহ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এমপি-মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, আমলা-কামলা যার নামই পাপুলের মুখ থেকে আসুক না কেন, কেউ আইনের আওতার বাইরে থাকবে না।
এদিকে পাপুল ইস্যুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ পর্যায়ের দু’জন কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে কুয়েত সরকার। তাদের ব্যক্তিগত একাউন্টের তথ্য তালাশ শুরু হয়েছে। কূটনীতিক সুবিধাপ্রাপ্ত (ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি) হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হবে না। তবে যেকোনো সময় তাদের প্রত্যাহারে ঢাকাকে অনুরোধ করা হতে পারে।