বাংলাদেশে সাংবাদিক নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা। তারা গুমের প্রতিটি ঘটনা পুঙ্খনাপুঙ্খভাবে দ্রুততার সাথে তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশনের গুম সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের তথ্যভান্ডরে বাংলাদেশের ৬০টির বেশি কেস চলমান রয়েছে।
বুধবার জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিবৃতিতে বাংলাদেশের সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ওপর চলমান নিপীড়ন ও এর আগে তার সন্দেহজনক গুমের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কাজলের আটকাদেশ ও তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর কারণে বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতা খর্ব করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শফিকুল ইসলাম কাজলের মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের নিপীড়ন গণমাধ্যমকর্মী, তাদের পরিবার এবং সার্বিকভাবে পুরো সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। সমাজ, গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার জন্য গণমাধ্যম একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।
এতে বলা হয়, গত ১০ মার্চ গুম হওয়ার আগে কাজল যৌনকাজের জন্য মানবপাচারের ওপর প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিলেন, যার সাথে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষমতাসীন দলের দু’জন উচ্চ পর্যায়ের নেতা কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় তদন্ত শুরু করে। গত ৩ মে কাজলকে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় ভারত সীমান্তে পাওয়া যায়। এ সময় কাজলকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য আটক করা হয়। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে কাজলকে জামিন ও মুক্তি নির্দেশ দিলেও আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় চলমান তদন্তের কারণে ১৫ দিনের আটকাদেশ দেন। তবে আটকাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কাজল মুক্তি পায়নি।