আমেরিকা সব সময়ই একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, আমেরিকা সব সময় একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ছিল। তবে বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় এর সন্ত্রাসী কার্যক্রম নজিরবিহীন। এমনকি করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানে ওষুধ আমদানিতে বাধা সৃষ্টি করছে ওয়াশিংটন। তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক ইরান বিরোধী কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র রাজনীতির প্রাথমিক জ্ঞান আছে বলে মনে হয় না।”
বিশ্বজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটার একইসঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে মার্কিন মিথ্যাচারিতা আগের চেয়ে আরো বেশি স্পষ্ট হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতেও হোয়াইট হাউজ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির করলেও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ‘ইরানে ওষুধ আমদানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।’ অথচ বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান কোনো ওষুধই আমদানি করতে পারছে না। সুইজারল্যান্ড সরকার স্বীকার করেছে মার্কিন বাধার কারণে অর্থ স্থানান্তর চ্যানেলে ইরানে ওষুধ আমদানির জন্য কোনো লেনদেনই হয়নি।
প্রকৃতপক্ষে, দুর্যোগ মুহূর্তে জরুরি পণ্যসামগ্রী আনার জন্য লেনদেনের সমস্ত পথ আটকে রেখেছে আমেরিকা। কারণ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিণতির কথা ভেবে বিশ্বের রপ্তানিকারক সমস্ত প্রতিষ্ঠান আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এবং ইচ্ছা থকলেও তারা ইরানের সঙ্গে লেনদেনে ভয় পাচ্ছে। ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শুধু যে মানবাধিকারের মূল নীতির লঙ্ঘন ও বেআইনি তাই নয় একইসঙ্গে এর ফলে ইরানের সাধারণ মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইরানকে বেগ পেতে হচ্ছে কিন্তু দেশটির সকল স্তরের মানুষের সমন্বিত পদক্ষেপের কারণে ইরানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এমনকি ইরান করোনা মোকাবেলায় চিকিৎসা সামগ্রীও রপ্তানি শুরু করেছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্বেও করোনা মোকাবেলায় ইরান যেভাবে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে তাতে বোঝা যায় রাজনৈতিকভাবে ইরানকে একঘরে করার মার্কিন চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। তা ছাড়া সীমিত সংখ্যক মাত্র কয়েকটি দেশ ওয়াশিংটনের অনুসরণ করছে। ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিরলস ব্যর্থ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও পরমাণু সমঝোতায় সইকারী অন্যান্য দেশকে তাদের পক্ষে টানতে পারেননি এবং কোনো দেশই ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নীতিকে এখনো সমর্থন দেয়নি।
সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি ব্যর্থ হওয়ার পর মার্কিন কর্মকর্তারা এখন কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করছেন যা থেকে করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে তাদের সন্ত্রাসী আচরণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।