২০ বছরে বিশ্বকে পাঁচ বার কাঁদিয়েছে চীন, আর নয়!
বিশ্বকে বিগত ২০ বছরে পাঁচবার কাঁদিয়েছে চীন। আর নয়, এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। করোনা সংক্রমণের জন্য চীনকে দায়ী করে এভাবেই কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রায়েন। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে আড়াই লাখের বেশি মৃত্যুর দায় চীনের। উহানের গবেষণাগার কিংবা মার্কেট, যেখান থেকেই মরণ ভাইরাস ছড়াক না কেন, দায়ভার বেইজিংয়ের। ‘আমরা বারবার চীনের এ আঘাত মেনে নেব না।’ মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওব্রায়েন। তিনি বলেছেন, ‘সার্স, অ্যাভিয়ান ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু এখন কভিড, সব সময় সারা বিশ্বকে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের সামনে দাঁড় করিয়েছে চীন।’
পঞ্চম আঘাতের কথা উল্লেখ না করলেও তথ্য-প্রমাণ খাঁড়া করে চীনকে কোণঠাসা করেছেন মার্কিন উপদেষ্টা। আমেরিকা চীনে চিকিৎসক দল পাঠিয়ে ভাইরাসের উৎস খোঁজার কথা বললেও সে পথে যেতে নারাজ বেইজিং। কিন্তু এ নিয়ে পঞ্চমবার চীনের জন্য গোটা বিশ্ব কাঁদছে। তার বক্তব্য, তারা চান না ভবিষ্যতে ফের চীন থেকে অন্য একটি ভাইরাস আসুক। তাই চীনকে সব দিক থেকে সাহায্য করতে প্রস্তুত তারা। কোনো সময়সীমা না জানাতে পারলেও ওব্রায়েন জানিয়েছেন, ভাইরাসের উৎসজনিত মজবুত প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। উল্লেখ্য, এ করোনাভাইরাসের জেরে ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় তিন লাখ, আক্রান্ত ৪৩ লাখেরও বেশি। শুধু আমেরিকায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮৩ হাজারের বেশি, আক্রান্ত ১৪ লাখ।এদিকে অস্ট্রেলিয়ার চার বৃহৎ প্রতিষ্ঠান থেকে গরুর মাংস আমদানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবির মধ্যেই এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেইজিং। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি। রয়টার্স জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের উৎস ইস্যুতে তদন্ত নিয়ে বিবাদের জেরে ইতিমধ্যে দুই দেশের প্রধান প্রধান কৃষিপণ্যের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। গত মাসে করোনাভাইরাসের উৎপত্তির বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানায় অস্ট্রেলিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিসে পেইনে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ব্যাপারে চীনের স্বচ্ছতা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। এটি খুব উচ্চপর্যায়ের। যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করা দরকার। আমি মনে এটা করা গুরুত্বপূর্ণ। এর জোরালো তদন্ত চায় অস্ট্রেলিয়া।’
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চীন। দেশটি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, অস্ট্রেলিয়ার এমন দাবির ফলে অসি পণ্য বর্জন করতে পারে চীনা গ্রাহকরা। এর কয়েক দিনের মাথায় অস্ট্রেলিয়া থেকে বার্লি আমদানিতে ৮০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করে বেইজিং। বিবিসি জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীন। ক্যানবেরার মোট রপ্তানি বাণিজ্যের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সামগ্রীর ক্রেতা বেইজিং। ফলে শুরুতেই অসি পণ্য বর্জনের হুমকি চীনের ‘অর্থনৈতিক জবরদস্তি’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। দৃশ্যত এখন সে পথেই হাঁটছে বেইজিং। অস্ট্রেলিয়ার যে চার প্রতিষ্ঠান থেকে গরুর মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেগুলো দেশটির এ খাতের সবচেয়ে বড় উৎপাদক। চীনের দাবি, প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যে লাগানো স্টিকার বা লেবেলে ত্রুটি রয়েছে। দুই দেশই দাবি করেছে, চীনের সিদ্ধান্ত ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধমূলক’ নয়। তবে বেইজিংয়ের পদক্ষেপকে ‘হতাশাজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী সাইমন বার্মিংহাম।