২০১৯ সালে দুই কোটি শিশু অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার: ইউনিসেফ

0

বিশ্বব্যাপী সংঘাত-সহিংসতায় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ২০১৯ সালে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু নিজ দেশে বাস্তুচ্যুত হয়ে জীবন যাপন করছে। মঙ্গলবার (৫ মে) জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর আনাদোলু।

ইউনিসেফের ‘লস্ট অ্যাট হোম’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ সংঘাত ও সহিংসতায় আনুমানিক ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে চারজন শিশু। অর্থাৎ ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু।

২০১৯ সালে নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ এবং সংঘাত ও সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৮৫ লাখ। এর মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ছিল শিশু। এছাড়া গত বছর বাস্তুচ্যুত হওয়াদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি ছিল ১৮ বছরের নিচে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ শিশু কোনো ধরনের যত্ন ও সুরক্ষা ছাড়া জীবনযাপন করছে। কোভিড-১৯ মহামারীর মতো নতুন সংকটে ওই শিশুদের অবস্থা আরো নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়,  পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকাতে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত শিশুদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত শিশুদের অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির এটা ছিল সর্বোচ্চ উপাত্ত এবং চলমান কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে শিশুদের জীবনে আরো বিপর্যয় ও অনিশ্চয়তা ডেকে আনবে।

যে শিশুরা বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা কঠিন এবং তারা সবসময় সহিংসতা, শোষণ, হয়রানি, মানব পাচার, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ ও পারিবারিক বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়। এ সংকট মোকাবেলায় কৌশলগত বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকার, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত ও মানবাধিকার সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলে প্রতিবেদনটিতে সুপারিশ করা হয়।

ইউনিসেফ বলছে, করোনা ভাইরাস মহামারীর ফলে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত শিশু এবং তাদের পরিবারের ওপর আরো খারাপ পরিস্থিতি নেমে আসবে। জনাকীর্ণ শিবির ও অনানুষ্ঠানিক বসতিগুলোতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কঠিন ঠেকেছে। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা তো প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।

বিশ্বব্যাপী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ইউনিসেফ বলছে, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল গঠন করে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ আশ্রয়, সুরক্ষা ও সমতাপূর্ণ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা উচিত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com